অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশে বিনিয়োগ ব্যাপক সাফল্য বয়ে আনবে—জাপানে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট উদ্বোধনকালে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

জাপান সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) দেশটির হোটেল ওয়েস্টিনে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট উদ্বোধনকালে বলেছেন, “বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই আপনারা সবাই আমাদের উন্নয়ন ও অর্জনের অংশীদার হন”।

শেখ হাসিনা দেশটির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশে এসে ব্যবসা ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা অনুসন্ধানের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে, আপনাদের বিনিয়োগ আপনাদেরকে বড় ধরনের সাফল্য এনে দেবে”।

বাংলাদেশ ও জাপানের কোম্পানিগুলোর মধ্যে সহযোগিতা দেখে আনন্দ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমরা জাপানি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে বিশেষত আড়াইহাজারে জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলে আরও বিনিয়োগ আশা করছি”।

তিনি বলেন, “জাপানে বসবাসরত প্রবাসী (অনাবাসী) বাংলাদেশি (এনআরবি) এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মানুষের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তারা তাদের রেমিটেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে উল্লেখযোগ্য সহায়তা প্রদান করছে। আমি তাদের আরও উদ্যোক্তা বিকাশ, ব্যবসায়িক উদ্যোগ এবং তাদের জাপানি বন্ধুদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে জড়িত হওয়ার আহ্বান জানাই”।

শেখ হাসিনা বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, তাই দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি করতে জাপানের সঙ্গে কাজ করছে।

তিনি বলেন, অর্থনীতিতে আইসিটি, ইলেকট্রনিকস, অবকাঠামো, চামড়া, টেক্সটাইল, আতিথেয়তা ও পর্যটন, ভারী শিল্প, রাসায়নিক ও সার এবং এসএমইর মতো বিভিন্ন খাতে সুযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের সরকার ব্যবসা করার মসৃণ, সহজ ও দক্ষ উপায়গুলো সহজতর করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। বিদেশি বিনিয়োগের জন্য আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাই-টেক এবং সফটওয়্যার পার্ক নির্মাণ করছি”।

তিনি জাপানি বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করে বলেন, বাংলাদেশ তাদের জন্য প্রস্তুত এবং সেখানে গেলে তাদের দারুণ অভিজ্ঞতা হবে।

তিনি বলেন, “আপনাদের ব্যবসার সুবিধার্থে সমস্ত প্রয়োজনীয় এজেন্সি ও কাঠামো স্থাপন করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে আমি সরকারের রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ অনুযায়ী জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন সাধন করে যাচ্ছি”।

শেখ হাসিনা বলেন, “দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, ডিজিটালাইজেশন, খাদ্য উৎপাদন ও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল ও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। স্থিতিস্থাপক জনগণ এখন ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার আশা ও আশাবাদ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে”।

তিনি আরও বলেন, “২০৪১ সালের মধ্যে আধুনিক, উন্নত ও জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশের পথে আমরা বদ্ধপরিকর”।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ১৭ কোটি মানুষের দেশ, যা নিজেই একটি ক্রমবর্ধমান বাজার। প্রায় তিন বিলিয়ন ভোক্তাদের বৃহত্তর বাজারের কেন্দ্রে এর অবস্থান, যা ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য একটি বিশাল আকর্ষণ সরবরাহ করে।

সম্মেলনে জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী নিশিমুরা ইয়াসুতোশি, জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) চেয়ারম্যান ইশিগুরো নোরিহিকো এবং জাপান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (জেসিসিআই) চেয়ারম্যান কেন কোবাইয়াশি বক্তৃতা করেন।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) যৌথভাবে ‘বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ’ (ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ বিট্যুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড জাপান) শীর্ষক এই সম্মেলনের আয়োজন করে।

XS
SM
MD
LG