অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

নরেন্দ্র মোদীকে ‘বিষধর সাপ’ বলে বিতর্কে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস সভাপতি


ভারতের কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
ভারতের কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

বৃহস্পতিবার ২৭ এপ্রিল এক নির্বাচনী সভায় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, "মোদী বিষধর সাপ। সে কাউকে কামড়ে দিলে মৃত্যু অনিবার্য।"

শুক্রবার ২৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের কর্নাটক রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে নামতে চলেছেন। আগামী ১০ মে সে রাজ্যে ভোট। সেখানে ৮ মে পর্যন্ত টানা প্রচার করবেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যদিকে, নিজের রাজ্যের ভোটে খাড়গেও ঠিক করেছেন ১০ মে বিধানসভার ভোট শেষ করে দিল্লি ফিরবেন। গত এক সপ্তাহ ধরে রোজই সভা, বৈঠকে ব্যস্ত কংগ্রেস সভাপতি। দলের সভাপতি হিসাবে কর্নাটকের ভোট তাঁর জন্য বাড়তি গুরুত্বের। বৃহস্পতিবার খাড়্গে সভা করেন তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্র কালাবুরাগিতে। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী মোদীকে তীব্র আক্রমণ শানান।

অবশ্য মঞ্চ থেকে নেমেই তিনি বলেন, "আমি ব্যক্তি নরেন্দ্র মোদী বা প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে কথাটি বলিনি। বলেছি বিজেপির নীতি আদর্শ সম্পর্কে। বিজেপির নীতি সাপের বিষের মতো। ওদের সম্পর্কে মানুষকে সচেতন থাকতে বলেছি।" পরে এই কথাগুলিই ট্যুইট করেন তিনি।

খাড়গের কথা নিয়ে জল অনেক দূর গড়াবে, মনে করছে কংগ্রেস। কর্নাটকে ভোটে কংগ্রেসের কৌশল ছিল প্রধানমন্ত্রীকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ না করে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে দল বেশি সরব হবে। ২০১৯-এ কর্নাটকের কোলারের সভাতেই রাহুল গান্ধী মোদী পদবিধারীদের সম্পর্কে আপত্তিজনক মন্তব্য করে মানহানির মামলায় ফেঁসে গিয়েছেন। দু’ বছর কারাবাসের সাজা হওয়া মাত্র সাংসদ পদ হারিয়েছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত। এই সূত্রে রাহুল গান্ধীর মন্তব্য শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, ওবিসি-দের অবমাননা বলে জোর প্রচারে নেমেছে বিজেপি। তাঁর পাশাপাশি এবার খাড়গের বক্তব্যও বিজেপির হাতিয়ার হতে পারে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। চিন্তিত কংগ্রেসও। কারণ, কর্নাটকেও মোদীকে সামনে রেখেই ভোট বৈতরণী পেরতে চাইছে বিজেপি।

বৃহস্পতিবারই সভা মঞ্চে ওঠার আগে খাড়্গে এক সাক্ষাৎকারে মোদীর জনপ্রিয়তা সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বলেন, "প্রধানমন্ত্রী তো কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হবেন না। বেঙ্গালুরুর বেহাল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রীর কাজ নয়। তাহলে মোদীর জনপ্রিয়তায় কর্নাটকের মানুষের কী এল গেল।" খাড়গে স্পষ্ট করেন, তারা রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা আর কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতিকে প্রচারে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

অথচ কংগ্রেস সভাপতিই দলীয় ভাবনার বাইরে গিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে মোদীর হাতে অস্ত্র তুলে দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। এমনিতেই হালে প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হচ্ছে বলে সরব হয়েছেন। এমন অভিযোগও করেছেন, কংগ্রেস তাঁর মৃত্যু কামনা করছে।

বৃহস্পতিবারই কংগ্রেস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। শাহ নির্বাচনী সভায় মন্তব্য করেছিলেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে রাজ্যে দাঙ্গা লাগবে। অন্যদিকে, দিল্লি থেকে কর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, "কংগ্রেসের মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে। ওই দল যত প্রতিশ্রুতিই দিক না কেন, মানুষ ওদের কথা কানে তুলবে না।" প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনার জবাবে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের বক্তব্য, "কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে চোখ বুলিয়ে ভয় পেয়েছে বিজেপি। তাই গেরুয়া বাহিনী সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাস্তায় হাঁটতে চাইছে।"

XS
SM
MD
LG