অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভোলায় নতুন কূপে গ্যাসের সন্ধান, দৈনিক উত্তোলন হবে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট


বাংলাদেশের দ্বীপজেলা ভোলায় আরো একটি কূপ থেকে জ্বালানি গ্যাস উত্তোলন শুরু করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড বাপেক্স। ক্রবার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৭ টা থেকে অগ্নি প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে এ গ্যাস উত্তোলন শুরু করে বাপেক্স। এ নিয়ে, ভোলা জেলায় মোট ৯টি কূপে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেলো।

ইলিশা-১ নামের নতুন এই কূপ থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ২২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশ্ববাজারে জ্বালানি গ্যাসের চড়া দাম ও সংকটের মধ্যে এমন গ্যাস কূপ পাওয়া একটা আশার খবর বলে উল্লেখ করেছে বাপেক্স।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দেশে জ্বালানি সংকট দূর করার লক্ষে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে বাংলাদেশ সরকার। গত ৮ মার্চ ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নে মালেরহাট সংলগ্ন এলাকায় ইলিশা-১ কুপে এবাপেক্স খনন শুরু করে।

বাপেক্সের নকশা ও লোকেশন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার গ্যাসপ্রম কূপ খনন কাজ পরিচালনা করছে। ৩ হাজার ৪৩৬ মিটার গভীরতায় তিনটি স্তরে ডিএসটি (ড্রিল স্টেম স্টেট) এর মাধ্যমে সফলভাবে কূপ খনন শেষ হয় ২৪ এপ্রিল। এরপর শুক্রবার সকাল ৭ টা থেকে আগুন জ্বালিয়ে গ্যাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। গ্যাসের প্রবাহ ও প্রেসার উৎপাদন যোগ্য বলে জানান প্রকৌশলিরা।

বাপেক্সের ভূতাত্ত্বিক বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হোসেন জানান, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এই কূপ থেকে দৈনিক ২০ থেক ২২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে। এটা প্রথম স্তরের প্রাক্কলন। আরো ২টা স্থরে পরীক্ষা করা হবে। সবগুলো স্তরের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বলা যাবে প্রতিদিন কত মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে।”

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ১৮০ থেকে ২২০ বিসিএফ ঘনফুট গ্যাসের মজুদ রয়েছে। তবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেতে সময় লাগবে আরো কিছুদিন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, আগামী ১৫ মে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্যাস উত্তেলন শুরু হবে বলে জানিয়েছে বাপেক্স।

উল্লেখ্য, ইলিশা-১ গ্যাসক্ষেত্রে এর আগে ১৯৯৩-৯৪ সালে ভোলার বোরহানউদ্দিনে শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারে হয়। এর পর সদর ও বোরহানউদ্দিন উপজেলায় শাহবাজপুর ও ভোলা নর্থ নামে আলাদা দুটি গ্যাসক্ষেত্রে ৮ টি কূপ খনন করা হয়। এসব কূপে মোট গ্যাস মজুদের পরিমান ১ দশমিক ৭ টিসিএফ ঘনফুট বলে জানা গেছে।

বর্তমানে ৪টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। প্রতিদিন ১৪০ এমএমসিএফ গ্যাস উত্তোলন করা গেলেও, এর সম্পূর্ণ ব্যবহার হচ্ছে না। গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে ৪টি বিদ্যুৎ প্লান্ট এবং কয়েকটি ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানে। ব্যবহৃত গ্যাসের পরিমান ৮০ এমএমসিএফ। এই অঞ্চলে গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্লান্ট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে দৈনিক ৪৮৫ মেগাওয়াট।

XS
SM
MD
LG