আসন্ন সিটি নির্বাচনে অংশ নিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কৌশল নিয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলে যে আলোচনা আছে, তা উড়িয়ে দিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের দল কোনোভাবেই আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না।
নবগঠিত জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শনিবার (২৯ এপ্রিল) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, “আমরা স্পষ্ট বলেছি যে আমরা কোনো ধরনের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যাচ্ছি না। বিশেষ করে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমাদের দল কোনো মেয়র বা কাউন্সিলর পদে লড়বে না।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “আওয়ামী লীগ নির্বাচন ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না বলে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়।” তিনি অভিযোগ করেন, “ক্ষমতাসীন দল ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে; সম্পূর্ণ প্রহসন করেছে। একইভাবে, ২০১৮ সালে তারা নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট ভরে ক্ষমতা দখল করেছিলো এবং জনগণ সেই নির্বাচনেও অংশ নেয়নি।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বর্তমান সরকারের অধীনে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জনগণ অংশগ্রহণ করছে না। সাম্প্রতিক উপ-নির্বাচনে (চট্টগ্রামে) মাত্র ১৪ শতাংশ মানুষ ভোট দিতে গিয়েছিলেন। মানুষ বোঝে এবং গোটা বিশ্ব বোঝে যে এই শাসন ক্ষমতায় থাকলে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “আগামী জাতীয় নির্বাচন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হলে জনগণ অংশগ্রহণ করবে না। প্রধানমন্ত্রী জনগণকে বিভ্রান্ত করতে এবং সরকারের ক্ষুণ্ণ ভাবমূর্তি মেরামত করতে বিদেশে গিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলছেন।” তিনি বলেন, “দেশের মানুষ এখন জেগে উঠেছে। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণ তুমুল আন্দোলনের মাধ্যমে এই শাসনকে পরাজিত করে দেশে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে।”
গণফোরাম ও পিপলস পার্টির সঙ্গে আলোচনা
গণফোরাম ও পিপলস পার্টির একাংশের সঙ্গে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের কৌশল ও পরবর্তী কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা করেছে বিএনপি। শনিবার বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন বিএনপি, গণফোরাম ও পিপলস পার্টির লিয়াজোঁ কমিটির সদস্যরা। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, চলমান যুগপৎ আন্দোলন কীভাবে জোরদার করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের সম্ভাব্য কর্মসূচি এবং এটিকে সফল করার জন্য আন্দোলনের প্রকৃতি সম্পর্কে কথা বলেছি।দেশের মুক্তিকামী মানুষ আন্দোলনের সাফল্যের অপেক্ষায় থাকায় বিএনপি অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কার্যকর কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলনকে এগিয়ে নেবে। আমরা জয়ী না হওয়া পর্যন্ত আমাদের যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে যাবো।”
