বাংলাদেশে ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের ৩ মে পর্যন্ত বজ্রপাতে মোট ৩৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত বছরের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বজ্রপাতে ২৩৯ জন পুরুষ ও ৩৫ জন নারীসহ ২৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ মে) সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের (এসএসটিএফ) পক্ষ থেকে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়।
এসএসটিএফ ২০১৯ সাল থেকে বজ্রপাতে হতাহতের পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি খোলা আকাশের নিচে কাজ করা কৃষকদের মাঝে বজ্রপাত সম্পর্কে সচেতনমূলক কমসূচি পালন করে আসছে।
পরিসংখ্যান প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংগঠনটির সভাপতি কবিরুল বাশার ও সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা, গবেষণা সেলের প্রধান আব্দুল আলীম ও নির্বাহী সদস্য মোস্তাক আহমেদসহ স্বেচ্ছাসেবীরা উপস্থিত ছিলেন।
কবিরুল বাশার ও রাশিম মোল্লা বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে সরকারের কাছে দুই দফা দাবি জানান। দুই দফা দাবি হলো—এক. মানুষের মধ্যে বজ্রপাত সচেতনতা বাড়াতে বজ্রপাত সচেতনতা সম্পকৃত বিষয়টি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা। দুই. মাঠে মাঠে বজ্রনিরোধক টাওয়ার নির্মাণ ও উচু দ্রুত বর্ধনশীল গাছ লাগানো।
এসএসটিএফের পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে, ২০২৩ সালে বজ্রপাতে প্রথম মানুষ মারা যায় মার্চ মাসের ১৫ তারিখে। মার্চ থেকে মে মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত মারা গেছে ৬৬ জন। এর মধ্যে ৬৩ জন পুরুষ ও ৩ জন নারী। নারী ও পুরুষের মধ্যে শিশু রয়েছে ২ জন। এই সময়ের মধ্যে আহত হয়েছে ৮ জন। এর মধ্যে শুধু কৃষি কাজ করতে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে ৫১ জনের। নৌকায় থাকা অবস্থায় বা মাছ ধরতে গিয়ে মারা গেছে ১১ জন।
এ ছাড়া, বজ্রপাত ও কালবৈশাখী ঝড়ের মধ্যে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা গেছে ১ জন। বাড়ির আঙ্গিনায় খেলা করার সময় বজ্রপাতে মারা গেছে ৩ জন।
অন্যদিকে চলতি বছর বজ্রপাতে মৃত্যুর মোট সংখ্যার মধ্যে পুরুষ মারা গেছে ৬৩ জন এবং নারী ৩ জন। নারী ও পুরুষের মধ্যে শিশুর সংখ্যা ২ জন ও কিশোর ৪ জন।
চলতি বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বজ্রপাতে হতাহতের কোনো ঘটনা না থাকলেও মার্চ মাসের ১৫ তারিখ থেকে মৃত্যুর ঘটনা শুরু হয়। মার্চ মাসের শেষ দিন পর্যন্ত মারা যায় ১৫ জন। এপ্রিল মাসে মারা যায় ৫০ জন। অন্যদিকে চলতি মে মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত পর্যন্ত মারা গেছে ১ জন।
বজ্রপাতে হতাহতের এই পরিসংখ্যান করা হয়েছে জাতীয় দৈনিক, স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিউজ ও টেলিভিশনের স্ক্রল পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে।
এ বছর বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটেছে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জে। এ জেলায় মারা গেছে ৭ জন। সিলেট জেলায় মারা গেছে ৫ জন।
