অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ঘূর্ণিঝড় মোকা আরও ঘনীভূত হয়ে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হতে পারে—দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান


মানচিত্রে সাইক্লোনের গতিপথ
মানচিত্রে সাইক্লোনের গতিপথ

বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ আরও ঘনীভূত হয়ে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হতে পারে। আর আবহাওয়াবিদেরা ভবিষ্যদ্বাণী করছেন যে সময় এটি ভূমিতে আঘাত হানবে, তখন এটি সম্ভবত একটি গুরুতর ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে।

এনামুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড়টি রবিবার (১৪ মে) নাগাদ কক্সবাজার উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে বলে।

বুধবার (১০ মে) বিকেলে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এনামুর রহমান এ মন্তব্য করেন। এর আগে ঘূর্ণিঝড় মোকা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করতে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করেন তিনি।

এনামুর রহমান বলেন, “আমরা পূর্বাভাস দিয়েছি যে এটি একটি সুপার সাইক্লোনে পরিণত হবে। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ২২০-২৩২ কিলোমিটার হতে পারে”।

এনামুর রহমান বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ বৃহস্পতিবারের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।

তিনি বলেন, “পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি ১৩ মে সন্ধ্যা থেকে ১৪ মে সকালের মধ্যে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে”।

বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দেশের পূর্বাভাস সংস্থার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এনামুর রহমান আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি এখন উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

এনামুর রহমান বলেন, “এর অবস্থান এখনো বাংলাদেশের উপকূল থেকে গড়ে দেড় হাজার কিলোমিটার দক্ষিণে। এটি ১২ মে এর মধ্যে উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নেবে”।

উল্লেখ্য, ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের (আইএমডি) সর্বশেষ তথ্যানুসারে, নিম্নচাপটি বুধবার (১০ মে) ভোরে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এটি পোর্ট ব্লেয়ার (আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী শহর) থেকে প্রায় ৫৪০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং সিত্তওয়েন (মিয়ানমার) ১ হাজার ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে কেন্দ্রীভূত ছিল।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) বলেছে, গভীর নিম্নচাপটি বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। একটি নিম্নচাপকে ঘূর্ণিঝড় হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয় যখন এর বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৬৩-৮৮ কিলোমিটার হয়।

ঘূর্ণিঝড় মোকা এরপর উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে দক্ষিণ-পূর্ব ও সংলগ্ন মধ্য বঙ্গোপসাগরের দিকে অগ্রসর হবে এবং বৃহস্পতিবার সকাল নাগাদ ধীরে ধীরে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। তখন প্রতি ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ হবে ৮৯-১১৭ কিলোমিটার। তারপর শুক্রবার সকালে একটি খুব প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। তখন বাতাসের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১১৮-১৬৫ কিলোমিটার।

এরপরে এটি ধীরে ধীরে বাংলাদেশের উপকূলের উত্তর-উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে। যদিও আইএমডি অনুসারে এটি শনিবার (১৩ মে) দুর্বল হতে শুরু করবে।

রবিবার (১৪ মে) বিকেলে, এটি দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ এবং উত্তর মিয়ানমার উপকূলে—বাংলাদেশের কক্সবাজার ও মিয়ানমারের কিয়াউকপিউয়ের মধ্যে—একটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসাবে, সর্বোচ্চ ১১০-১২০ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগসহ প্রতি ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার বেগে স্থলভাগে আছড়ে পড়বে।

XS
SM
MD
LG