অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

যারা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশ কিছু কিনবে না: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার বলেছেন, “বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী কোনো দেশের কাছ থেকে বাংলাদেশ কিছু কিনবে না।” আইইবি সদর দপ্তরে, ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশ এর ৬০তম কনভেনশনের উদ্বোধনকালে শনিবার (১৩ মে) এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। যাদের দ্বারা আমরা জঙ্গিবাদ নির্মূল করি, তাদের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। আমরা একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি বলেছি যে যারা নিষেধাজ্ঞা দেবে, তাদের কাছ থেকে আমি কিছু কিনবো না।”

শেখ হাসিনা বলেন, “আপনারা আমার কি করবেন? আমার বাবা-মা, ভাই-বোন সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। আমার আর হারানোর কিছু নেই। আমি শুধু আমার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।”

২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং এর সাতজন প্রাক্তন ও বর্তমান কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

বাংলাদেশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং এর পরিবর্তে সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে র‌্যাবের সাফল্য তুলে ধরেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও র‌্যাব

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র‍্যাব ৭–এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধে সরকারের লড়াইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত। এতে বলা হয়েছে যে, তারা আইনের শাসন, মানবাধিকারের মর্যাদা ও মৌলিক স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ক্ষুণ্ন করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। র‍্যাব হচ্ছে ২০০৪ সালে গঠিত একটি সম্মিলিত টাস্ক ফোর্স। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধীদের কর্মকান্ড সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং সরকারের নির্দেশে তদন্ত পরিচালনা করা।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বা এনজিওদের অভিযোগ হচ্ছে যে, র‍্যাব ও বাংলাদেশের অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ ব্যক্তির গুম হয়ে যাওয়া এবং ২০১৮ সাল থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ী। কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এই সব ঘটনার শিকার হচ্ছে বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা।

XS
SM
MD
LG