বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান রবিবার (১৪ মে) বিকালে জানান যে কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে ১০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে টেকনাফের সেন্টামার্টিনেই ক্ষতি হয়েছে ১২০০ ঘরবাড়ি। তবে কোন প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। তবে আরো কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা পরে চূড়ান্ত ভাবে জানানো হবে।
তিনি বলেন, “মোখার তাণ্ডব থেমে গেছে। সিগন্যাল কমে এলে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা আড়াই লাখ মানুষ ঘরে ফিরতে পারবেন।”
ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রচণ্ড গতির বাতাস নিয়ে রবিবার (১৪ মে) বিকাল ৩টার দিকে কক্সবাজার ও মিয়ানমার উপকূল আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। তবে সন্ধ্যার আগেই এর প্রভাব কমে যায়।
দ্বীপ সেন্টমার্টিন, টেকনাফ সদর, পৌর এলাকা, সাবরাং, ডেইলপাড়া, জাদিমুড়া এলাকায় প্রচুর গাছপালা ভেঙে পড়েছে। উড়ে গেছে ঘরের চালা। বিভিন্ন এলাকায় মানুষকে সড়ক থেকে গাছ সরাতে দেখা গেছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান বলেন, “ঝড়ে ইতোমধ্যে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ পাওয়া গেছে। কিছু এলাকায় গাছগাছালি ও ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে।”
সেন্টমার্টিনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, “সন্ধ্যা থেকে সেন্টমার্টিনে বাতাসের গতি কমে গেছে। অনেক ঘরবাড়ি উড়িয়ে নিয়ে গেছে ঝড়। কয়েকজন আহত হয়েছে।”
কক্সবাজার শহর, সদর উপজেলা, মহেশখালী উপজেলা, কুতুবদিয়া উপজেলা ও রামু উপজেলায়ও মোখা আঘাত হেনেছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ঘূর্ণিঝড় মোখা উপকূল অতিক্রম শেষ করেছে
অত্যন্ত প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে রবিবার সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করেছে এবং দুর্বল হয়ে মিয়ানমারের সিটুয়ের কাছে স্থল গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের বুলেটিনে বলা হয়েছে, এটি স্থলভাগের অভ্যন্তরে আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমান্বএয় দুর্বল হতে পারে।এদিকে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া, চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারী সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।