অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাজেট জনবান্ধব: আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের—জনগণের টাকা লুটপাটের স্মার্ট বাজেট: বিএনপি নেতা আমীর খসরু


বাজেট জনবান্ধব: আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের—জনগণের টাকা লুটপাটের স্মার্ট বাজেট: বিএনপি নেতা আমীর খসরু
বাজেট জনবান্ধব: আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের—জনগণের টাকা লুটপাটের স্মার্ট বাজেট: বিএনপি নেতা আমীর খসরু

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ সরকারের সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে দেশকে সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করবে।

অন্যদিকে বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটকে জনগণের টাকা লুটপাটের স্মার্ট বাজেট হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

বাজেট জনবান্ধব—ওবায়দুল কাদের

ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশকে সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করবে।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) বাংলাদেশ জাতীয সংসদ ভবনের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “বর্তমান বিশ্বের দিকে তাকান। কোনো দেশই এত ভালো নয়। ইউরোপ ... এমনকি আমাদের প্রতিবেশীদের দিকেও তাকান, তারা কি ভালো করছে? আমরা তুলনামূলকভাবে ভালো আছি”।

এই বাজেট জনবান্ধব বাজেট। জনদুর্ভোগ কমানোর জন্য বাজেট তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “এটি একটি জনবান্ধব বাজেট। সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখেই এই বাজেট করা হয়েছে”।

জনগণের টাকা লুটপাটের জন্য এটি একটি স্মার্ট বাজেট—আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটকে জনগণের টাকা লুটপাটের স্মার্ট বাজেট হিসেবে বর্ণনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, “এটি অবশ্যই একটি স্মার্ট বাজেট। বর্তমান সরকারের চেয়ে কোনো সরকারই লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করতে পারে না। বাজেটের সুবিধা নিয়ে বর্তমানের চেয়ে স্মার্টভাবে ব্যাংক ও জনগণের টাকা কেউ লুট করতে পারবে না”।

বৃহস্পতিবার আমীর খসরু তাঁর বনানীর বাসায় প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট নিয়ে দলের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, নতুন বাজেট সরকারকে জনগণের টাকা লুটপাটের বিভিন্ন সিন্ডিকেট চালাতেও সহায়তা করবে। “সুতরাং, নিঃসন্দেহে সেই দৃষ্টিকোণ থেকে এটি একটি খুব স্মার্ট বাজেট”।

আমীর খসরু বলেন, দেশের মানুষও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারের স্মার্ট বাজেটের জবাব দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

তিনি বলেন, “সরকার পৃষ্ঠপোষক-ক্লায়েন্ট সম্পর্কের নীতি নিয়ে জনগণের অর্থ লুট করার জন্য একটি অর্থনৈতিক মডেল তৈরি করেছে। এই অর্থনৈতিক মডেলের ভিত্তিতে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। এর মানে যারা ক্ষমতাসীন দলের সদস্য বা সরকারের পৃষ্ঠপোষক; তারা এই বাজেট থেকে উপকৃত হবেন, সাধারণ মানুষ নয়”।

আমীর খসরু বলেন, সরকারের অর্থনৈতিক কৌশল কর চাওয়া, কমিশন ও চাঁদাবাজি নীতির ওপর ভিত্তি করে। “তারা (আওয়ামী লীগ নেতারা) যেকোনো কাজে কর, চাঁদা ও কমিশন নেবে। এটি অর্থনীতি ও বাজেটের ভিত্তি এবং জনগণ এর প্রধান ভুক্তভোগী। সব প্রতিষ্ঠানই লুণ্ঠনের উপযোগী হয়ে উঠেছে। পৃষ্ঠপোষক-ক্লায়েন্ট সম্পর্ক ব্যবস্থা, কর আদায় নীতি এবং শোষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের সমগ্র অর্থনীতিকে চালিত করছে।

আমীর খসরু বলেন, বাজেট বাস্তবায়ন হলে সরকার সমর্থিত মহল আরও ধনী হবে এবং সাধারণ মানুষ আরও দরিদ্র হবে। সরকার ক্ষমতাসীন দলের মদদপুষ্ট লুণ্ঠনকারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য বিএনপির আমলে স্থিতিশীল অবস্থানে থাকা সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামোকে ধ্বংস করেছে। “তাই মানুষ দরিদ্র হচ্ছে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান হারাচ্ছে”।

তিনি বলেন, জনগণ যখন বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করছে, তখন সরকার করের জাল বাড়িয়ে তাদের ওপর নতুন করে বোঝা চাপিয়েছে। “যারা দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে ধনী হচ্ছেন তারা কর দেন না, কারণ তারা অবৈধভাবে তাদের অর্থ বিদেশে পাচার করেন ও দেশে ডলার সংকট তৈরি করেন। আর ডলারের ঘাটতির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে, মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে”।

আমীর খসরু বলেন, সরকার বাংলাদেশ ব্যাংক, অন্য ব্যাংক ও বাহ্যিক উৎস থেকে ঋণ নেওয়ায় গত ৭ বছরে সরকারের ঋণ বেড়েছে ৫২ শতাংশ। এই ঋণ শোধ করতে হবে নতুন প্রজন্মকে।

আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশের বিধ্বস্ত অর্থনীতি উদ্ধারে রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন। “রাজনৈতিক সমাধান মানে বাংলাদেশের জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ও সংসদ প্রতিষ্ঠা করা”।

তিনি বলেন, বাজেট জনগণের চিন্তার প্রতিফলন এবং রাজনৈতিক চিন্তার প্রতিফলন। “একটি অবৈধ দখলদার সরকার ক্ষমতায় থাকায় জনগণের রাজনৈতিক চিন্তা বাজেটে প্রতিফলিত হবে না”।

আমীর খসরু বলেন, এই বাজেট মূল্যস্ফীতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমাতে সাহায্য করবে না, কারণ লুটপাট ও অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেই।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) তিনি জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করেন।

আ হ ম মুস্তফা কামালের টানা পঞ্চম এবং বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ বাজেট এটি।

বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারের সঙ্গে মিল রেখে একটি ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক-প্রবৃদ্ধির দিকে দেশকে চালিত করার এবং ৪৭০ কোটি ডলারের (ইউএস) ঋণের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়েছে।

XS
SM
MD
LG