অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে, হতাহত অগনিত


ভারতে ঘটল ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা। পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ার শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়ল ২রা জুন শুক্রবার বিকেলে। ওড়িশার বালেশ্বরে বাহানাকা স্টেশনের কাছে একটি মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে সম্পূর্ণ উল্টে যায় চেন্নাইগামী ট্রেনটির একাধিক কামরা। তিনটি কামরা একেবারে দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে। হতাহতের সংখ্যা নিয়ে এখনও স্পষ্ট ধারণা করা যাচ্ছে না। তবে আহত ও নিহতের সংখ্যা বহু বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। রেলের তরফে উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে। খবর দেওয়া হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও।

পূর্ব ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে দক্ষিণ ভারতের চেন্নাই যাওয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্রেন করমণ্ডল এক্সপ্রেস। চেন্নাই তথা দক্ষিণ ভারত যাওয়ার জন্য কলকাতা তথা পূর্ব ভারতের যাত্রীদের এক বিরাট ভরসার জায়গা এই ট্রেন। চিকিৎসার জন্যও অনেকে এই ট্রেনটিতে যান। বস্তুত, চিন্তা বাড়াচ্ছে এই বিষয়টাই। পশ্চিমবঙ্গ শুধু নয়, আসাম, বিহার, এমনকি বাংলাদেশেরও বহু অসুস্থ মানুষ করমণ্ডলে দক্ষিণ ভারতে যান চিকিৎসা করাতে। তুমুল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বাতানুকূল কামরাগুলো।


ঠিক কী কারণে মালগাড়ির সঙ্গে একেবারে মুখোমুখি সংঘর্ষ হল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। যা জানা যাচ্ছে, দুটো ট্রেন একইসঙ্গে একই লাইনে মুখোমুখি চলে আসে। দক্ষিণ পূর্ব রেলের অন্যতম ‘সুপারফাস্ট’ এই ট্রেনের সামনের কামরাগুলো স্রেফ গতির অভিঘাতেই একেবারে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। সংবাদ সূত্রে জানা যাচ্ছে, পিছনের তিনটি মাত্র কামরা বাদে বাকি পুরো ট্রেনটাই লাইনচ্যুত হয়ে চারদিকে ছিটকে যায়।


দীর্ঘদিন অবধি হাওড়া থেকে ছাড়ত করমণ্ডল এক্সপ্রেস। চেন্নাই মেলের চাইতে অনেকটাই বেশি দ্রুতগামী করমণ্ডলে জায়গার চাহিদা বরাবরই অত্যন্ত বেশি। ওই লাইনে বেশি ট্রেন না থাকায় ‘স্লিপার’ কামরাতে নির্ধারিত যাত্রীদের চাইতেও অনেক বেশি যাত্রী উঠে থাকেন। সম্প্রতি হাওড়ার ‘ট্র্যাফিক’ কমাতে করমণ্ডল এক্সপ্রেসকে শালিমারে সরিয়ে নিয়ে যায় দক্ষিণ পূর্ব রেল। দুপুর ৩.২০ মিনিটে শালিমার থেকে প্রতিদিন ছাড়ে এই ট্রেন। বিকেল ৫.১৫-তে খড়্গপুর ছাড়ানোর পর সাড়ে ছ’টা নাগাদ বালেশ্বরে ঢোকার কথা করমণ্ডলের। তার আগেই কার্যত ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে করমণ্ডল। সংঘর্ষে মালগাড়িটিরও একাধিক বগি ছিটকে যায় লাইন থেকে।


দক্ষিণ পূর্ব রেল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই খড়্গপুর থেকে রওনা দিয়েছে দক্ষিণ পূর্ব রেলের উদ্ধারকারী দল। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। হতাহতের সংখ্যা নিয়ে এখনও স্পষ্ট কোনও তথ্য দিতে পারেনি রেল। সম্প্রতি করমণ্ডল এক্সপ্রেসের জন্য অত্যাধুনিক ‘লিঙ্ক-হফম্যান-বুশ’ প্রযুক্তির রেক আনা হয়েছিল পাঞ্জাবের কাপুরথালা থেকে। জার্মান প্রযুক্তিতে তৈরি স্টেনলেস স্টিলের এই রেক দুর্ঘটনা সামলাতে অনেক বেশি সক্ষম। এই রেকের বৈশিষ্ট্য, এটি বেলাইন হলেও উল্টে যায় না। কিন্তু আজকের ধাক্কার অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে, ২৩-টি কামরার মধ্যে ২০ টি কামরাই একেবারে উল্টে যায়। একাধিক কামরা উঠে গিয়েছে মালগাড়ির ওপর। চূড়ান্ত ক্ষতিগ্রস্থ ট্রেনের প্যান্ট্রি কার। মালগাড়ির ওপরে উঠে গিয়েছে করমণ্ডলের ইঞ্জিনটিও।

XS
SM
MD
LG