ভারতে ওড়িশার বালেশ্বরে পশ্চিমবঙ্গ থেকে চেন্নাইগামী করমন্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ৭ জুন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে চেক তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। আহত ও মৃতদের পরিবারের একজনকে হোমগার্ডে চাকরি দেওয়ার ঘোষণাও করেন। সেই সঙ্গেই আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত, আহত, ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের ছেলেমেয়েরা যদি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চায়. তাহলে সেই ব্যবস্থাও করা হবে। সংশ্লিষ্ট জেলাগুলির জেলাশাসকদের সঙ্গে এই ব্যাপারে আলোচনা করবে রাজ্য শিক্ষা দফতর।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, ক্ষতিগ্রস্ত পড়ুয়া বা দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ছেলেমেয়েদের মধ্যে ৫০ জন ছাত্র ও ৫০ জন ছাত্রীকে পশ্চিমবঙ্গের রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশনে অ্যাডমিশন দেওয়ার ব্যবস্থা হবে। যে যেখানে থাকেন, তার কাছাকাছি রামকৃষ্ণ মিশনেই পড়ার সুযোগ করে দেওয়া হবে। তাছাড়া পড়ুয়াদের প্রয়োজন অনুযায়ী পড়াশোনায় যাবতীয় সাহায্য করবে রাজ্য সরকার, দেওয়া হবে স্কলারশিপও।
শুক্রবার ২ জুন করমণ্ডল বিপর্যয়ের পরের দিনই বালেশ্বরের দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার বালেশ্বরে দাঁড়িয়েই বাংলার মৃতদের পরিবারের জন্য ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার ৫ জুন থেকে এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছিল রাজ্য প্রশাসন। মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জেলাশাসকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। সেখানে তিনি জেলাশাসকদের বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত ও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা দ্রুত পাঠাতে বলেন। ওই তালিকা অনুযায়ী বুধবার নেতাজি ইন্ডোরে ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে চেক তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, মৃত ব্যক্তিদের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। গুরুতর আহতদের দেওয়া হয়েছে ১ লক্ষ করে। অল্প আহতদের ২৫ হাজার করে দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩ মাস তাঁদের রক্ষণাবেক্ষণ করবে সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, এই ঘটনায় যাঁরা সামান্য আহত বা গুরুতর আহত হয়েছেন, এমন ব্যক্তিদের পাশে যেমন রাজ্য সরকার থাকবে, তেমনই যাঁরা এই ঘটনা থেকে বেঁচে ফিরেছেন, তাঁরা এখনও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। মানসিক অবস্থা ভাল নয়। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে কয়েক মাস সময় লাগবে। সরকার আগামী ৩ মাস তাঁদেরও পাশে থেকে সাহায্য করবে। আপাতত তাঁদের ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। তার পর ৩ মাস তাঁদের ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি, যাঁরা কাজ চাইবেন, প্রয়োজনে তাঁদের ১০০ দিনের কাজ দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। মৃতদের পরিবারের একজনকে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল হোমগার্ডে চাকরি দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।