অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

নরেন্দ্র মোদী সরকারের ন বছর পূর্তির অনুষ্ঠান নিয়ে প্রকাশ্যে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি-র দলীয় দ্বন্দ্ব


নরেন্দ্র মোদী সরকারের ন বছর পূর্তির অনুষ্ঠান নিয়ে প্রকাশ্যে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি-র দলীয় দ্বন্দ্ব
নরেন্দ্র মোদী সরকারের ন বছর পূর্তির অনুষ্ঠান নিয়ে প্রকাশ্যে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি-র দলীয় দ্বন্দ্ব

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র এক হাজার ‘মণ্ডল’ আছে। মণ্ডল বা ব্লক হল বিজেপির সবচেয়ে নিচুতলার সাংগঠনিক কমিটি। নরেন্দ্র মোদীর সরকারের নয় বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলায় চারমাসে মণ্ডল পিছু একটি করে জনসভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্ব সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীরা। ১ জুন থেকে সেই কর্মসূচি শুরু হয়েছে। কিন্তু বুধবার ৭ জুন পর্যন্ত গোটা রাজ্যে মাত্র চারটি সভার আয়োজন করা গিয়েছে।

হাজার সভার মধ্যে ২৯৪টি বিধানসভা এলাকা পিছু একটি করে সভাও আছে। সেগুলি এ মাসেই শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে পশ্চিমবঙ্গের গেরুয়া শিবিরের কর্মসূচি। নেতাদের অধিকাংশই সময় দিতে পারছেন না।

দলীয় সূত্রের খবর, জেলা নেতারা রাজ্য নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তে অত্যন্ত অখুশি। এক জেলা সভাপতির কথায়, "নেতাদের বাস্তব বোধের কী পরিমাণ অভাব তা এই সিদ্ধান্তে পরিষ্কার। প্রতিটি জেলাজুড়ে নজিরবিহীন তাপপ্রবাহ চলছে। সন্ধ্যার আগে মানুষ বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। এই সময় প্রকাশ্য জনসভা করার সিদ্ধান্ত থেকে পরিষ্কার সাংগঠনিক বিষয়ে নেতারা কী পরিমাণ অজ্ঞ।"

যদিও এই গরমের মধ্যেই জেলায় জেলায় ‘তৃণমূলের নবজোয়ার’ কর্মসূচি পালন করছেন রাজ্যের শাসক দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, ব্লকে ব্লকে সভা, মিছিল, ধর্না কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে সিপিএম।

কিন্তু সভা-সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত করেও সাড়া ফেলতে পারছে না রাজ্য বিজেপি। ফলে তাপপ্রবাহ নাকি সাংগঠনিক দুর্বলতা, বিজেপির এই অবস্থার আসল কারণ নিয়েও দলের মধ্যে ধন্দ আছে। গত মাসেই রাজ্য কমিটির বৈঠকে প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে সরব হন।

দলীয় সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এ মাসেই ৭০টি সভায় উপস্থিত থাকবেন বলে দলকে জানিয়েছেন। অর্থাৎ কোনও কোনও দিন দুটির বেশি সভাও করতে হতে পারে তাঁকে। কীভাবে এই তাপপ্রবাহের মধ্যে লোক জড়ো করা সম্ভব তা ভেবেই পাচ্ছেন না জেলা নেতারা।

প্রাক্তন সভাপতি তথা বর্তমানে সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বেশ কয়েকটি রাজ্যে দলের সাংগঠনিক দায়িত্বে আছেন। তিনি ১৫ জুনের মধ্যে ৩০টি মিটিং করবেন বলে দলকে কথা দিয়েছেন। অন্যদিকে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আগামী সাত দিনে দশটি সভা করবেন।

বিজেপি সূত্রের খবর, এই গরমে ভিড় হবে না ধরে নিয়ে রাজ্য নেতাদের অনেকেই আবার জেলায় সভা করতে যেতে রাজি হচ্ছেন না। তারিখ পিছিয়ে দিচ্ছেন নেতাদের অনেকেই।

এরই মধ্যে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বকে চিন্তায় ফেলেছে দিল্লির নয়া সিদ্ধান্ত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং প্রাক্তন সভাপতি তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর এ মাসেই রাজ্যে আসার কথা। তাপপ্রবাহ চলতে থাকলে তাদের সভা কোনও অডিটোরিয়ামে করা হতে পারে।

কিন্তু মণ্ডল পিছু সভার কী হবে ভেবে পাচ্ছেন না বঙ্গ বিজেপির নেতারা। কারণ, খাতায় কলমে রাজ্যে বর্ষা আসার সময় পেরিয়ে গিয়েছে। বিলম্বে হলেও ১৫ জুনের মধ্যে বর্ষা ঢুকে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিলম্বিত বর্ষার শুরুতে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। সেই পরিস্থিতিতে বর্ষা নেমে গেলেও বড় সমাবেশ করা কঠিন।

XS
SM
MD
LG