অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

চীনে কর্মরত একমাত্র ভারতীয় সাংবাদিককে চীন ছাড়ার নির্দেশ দিল চীন সরকার


গোটা চীনে ভারতের মাত্র চারজন সাংবাদিককে কাজ করার অনুমতি দিয়েছিল বেজিং প্রশাসন। গত এপ্রিলে দু’জনের ভিসা আচমকাই প্রত্যাহার করে নেয় চিন। ফলে দেশে ফিরে আসতে হয় তাঁদের। পরিস্থিতির চাপে গত সপ্তাহে দেশে ফিরে আসেন আরও একজন। সোমবার ১২ জুন বেজিং প্রশাসন সংবাদসংস্থা পিটিআই-এর সাংবাদিককেও ডেকে বলে দিয়েছে, ৩০ জুনের মধ্যে চীন ছেড়ে যেতে হবে। ফলে চীনে ভারতের কোনও সাংবাদিক থাকবেন না ৩০ জুনের পর।

রাজনৈতিক মহলের মতে, এমন পরিস্থিতি অতীতে কখনও হয়নি। এমনকী ১৯৬২-তে ভারত-চীন যুদ্ধের সময়ও না। তখনও দুই দেশের সাংবাদিকেরা স্বাধীনভাবে কাজ করেছেন। যুদ্ধের দিনগুলিতেও গোয়েন্দা নজরদারির বেড়াজালে পড়তে হয়নি সাংবাদিকদের।

কূটনৈতিক চ্যানেলে চীন অভিযোগ করেছে তাঁদের দেশের সাংবাদিকদের ভারতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। যদিও ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি দু’দিন আগেই এই অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা বলেন, "বেজিংয়েই বরং ভারতীয় সাংবাদিকদের অনেক সমস্যার মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে।" তাঁর বক্তব্য, "চীনা প্রশাসন সে দেশের কোনও সাংবাদিককে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম কিংবা সংবাদ এজেন্সিতে কাজ করার অনুমতি দেয় না। একটা দেশ একজন সাংবাদিকের পক্ষে কভার করা কঠিন। তাই স্থানীয় সাংবাদিক নিয়োগের অনুমতি সব দেশ দিয়ে থাকে। ব্যতিক্রম চীন।"

বাগচি আরও অভিযোগ করেন, "ভারতীয় সাংবাদিকদের চীনে স্বাধীনভাবে চলাফেরার সুযোগ নেই। খবরের সন্ধানে যেতে হলে প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়। অথচ, ভারতে এমন কড়াকড়ি নেই। বিদেশি সাংবাদিকেরা স্বাধীনভাবে দেশের নানা জায়গায় যাচ্ছেন।"

রাজনৈতিক মহল বলছে, বেজিংয়ের পদক্ষেপ আসলে কূটনৈতিক প্রতিহিংসা। মে মাসে ভারত চীনের দুটি সরকারি সংবাদমাধ্যম জিনহুয়া নিউজ এজেন্সি এবং চাইনিজ ন্যাশনাল টেলিভিশনের সাংবাদিকদের ভিসা রিন্যুয়ালে রাজি হয়নি। তাঁরা গোয়ায় অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন সামিট কভার করতে এসেছিলেন। এর বদলা হিসাবে বেজিংয়ে কর্মরত বাকি ভারতীয় সাংবাদিকদেরও বের করে দিচ্ছে চীন থেকে।

চীনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখমাত্র ওয়াং ওয়েনবিন-এর পাল্টা অভিযোগ, ২০২০-র পর থেকে ভারত চীনা সাংবাদিকদের ভিসার মেয়াদ বাড়াচ্ছে না। ফলে বর্তমানে মাত্র একজন চীনা সাংবাদিক নয়াদিল্লিতে রয়েছেন। প্রসঙ্গত, ২০২০ থেকে লাদাখ ও অরুণাচল সীমান্তে চীন ও ভারতীয় সেনা নতুন করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তখন ভারতে চীনের ১৪ জন সাংবাদিক কর্মরত ছিলেন, দাবি ওয়েনবিন-এর।

তবে ভারত শুধু নয়, যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও জার্নালিস্ট ভিসা নিয়ে চীনের বিবাদ চলছে। চরবৃত্তির অভিযোগে চীন ওই দুই দেশের বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে বিতাড়িত করেছে। জবাবে ওই দেশ দুটিও চীনা সাংবাদিকদের ভিসা রিন্যুয়ালে রাজি হয়নি।

XS
SM
MD
LG