অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

উত্তর-পূর্ব ভারতের অশান্ত মণিপুরে রাজ্যপালের সফর শুরু, ২৫৩ চার্চ আক্রান্তর কথা জানালেন কুকি-রা


রাজ্যপাল অনুশুয়া উইকি
রাজ্যপাল অনুশুয়া উইকি

উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুরের দুই জনজাতির মধ্যে বিবাদের জেরে গত একমাসেরও বেশি সময়ব্যাপী সে রাজ্যে যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তাতে এখনও পর্যন্ত ২৫৩টি চার্চে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সে রাজ্যের দ্য ইন্ডিজেনিয়াস ট্রাইবাল লিডার্স ফোরাম অভিযোগ করেছে। এরমধ্যে ৮০টি পুরোপুরি ভস্মীভূত বলে কুকি জনজাতির একাধিক সংগঠনের ওই যুক্ত মঞ্চ অভিযোগ তুলেছে।

এদিকে, কংগ্রেস ফের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নীরবতা ভেঙে মণিপুর নিয়ে পদক্ষেপ করার পরামর্শ দিয়েছে। দলের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান জয়রাম রমেশ প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন, "আমরা মন কি বাত এর একশো পর্ব শুনেছি। এবার মণিপুর কি বাত শুরু হোক।"

এর কারণ মণিপুরে গোলমাল শুরুর ৪৪ দিন পরও প্রধানমন্ত্রী কোনও মন্তব্য করেননি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের এ পর্যন্ত গৃহীত কোনও পদক্ষেপই কাজে আসেনি। একদিন শান্ত থাকার পর সোমবার ১৩ জুন ফের একজন নিহত হয়েছেন। কুকিদের দাবি নিহত ব্যক্তি তাদের সম্প্রদায়ের মানুষ। এ পর্যন্ত সরকারিভাবে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১৯। ঘরছাড়া প্রায় ৫০ হাজার পরিবার।

এদিকে মণিপুরে শান্তি ফেরাতে রাজ্য সফর শুরু করেছেন রাজ্যপাল অনুশুয়া উইকি। অমিত শাহের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক রাজ্যপালকে মাথায় রেখে ৪৪ সদস্যের শান্তি কমিটি গঠন করেছে। রাজ্যপাল মণিপুরের সবচেয়ে অশান্ত জেলা চূড়াইচাঁদপুর জেলায় কুকি জনগোষ্ঠীর সংগঠনগুলির সঙ্গে সোমবার সারাদিন বৈঠক করেন। রাজধানী ইম্ফল থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে এই জেলাতেই প্রথম অশান্তির আগুন জ্বলেছিল মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের অনুষ্ঠান মঞ্চ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায়।

দ্য ইন্ডিজেনিয়াস ট্রাইবাল লিডার্স ফোরামের পক্ষ থেকে রাজ্যপালের হাতে তুলে দেওয়া চার পাতার স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়েছে, চলতি অশান্তিতে মণিপুরে ২৫৩টি চার্চ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পাহাড়ি রাজ্যটির যে দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে অশান্তি চলছে তাদের মধ্যে মইতেইরা হল হিন্দু। অন্যদিকে, কুকি জনিজাতিদের বেশির ভাগ হলেন খ্রিস্টান। উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে খ্রিস্টানদের প্রভাব বৃদ্ধি নিয়েও বিবাদ, সংঘর্ষের ঘটনা লেগেই আছে।

এদিকে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ মণিপুর নিয়ে ফের সরব হয়েছেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। তাঁর বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা নজিরবিহীন। কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে কেন ওই রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলছেন না প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেসের দাবি মণিপুরে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।

এখনও পর্যন্ত কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার প্রশাসনিক ব্যবস্থার মধ্যেই যাবতীয় পদক্ষেপ সীমাবদ্ধ রেখেছে। একদিকে সেনা ও আধা সেনার অভিযান চলছে। অন্যদিকে, সিবিআই ও বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। এর পাশাপাশি চলছে রাজ্যপালের নেতৃত্বে শান্তি কমিটির কাজ।

XS
SM
MD
LG