অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাফুফের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের বিষয়ে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো মতামত প্রকাশে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা


বাংলাদেশের হাইকোর্ট।
বাংলাদেশের হাইকোর্ট।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) দুর্নীতি-অর্থ পাচার, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ও ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনসহ যেকোনো গণমাধ্যমকে কোনো ধরনের মতামত প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ।

বুধবার (১৪ জুন) কাজী সালাউদ্দিনের করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে কাজী সালাউদ্দিনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি ও অ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন ফকির। অপর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

ব্যারিস্টার অনিক আর হক জানিয়েছেন, দুদকের অনুসন্ধান শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ কোনো মতামত প্রকাশ করতে পারবে না মর্মে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন হাইকোর্ট।

এর আগে গত ১৫ মে হাইকোর্ট বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনসহ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

ব্যারিস্টার সুমনের ফুটবল একাডেমির পক্ষে করা রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন। চার মাসের মধ্যে এ অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়।

একই সঙ্গে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাতের অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা বা নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুদকের চেয়ারম্যান, বিএফআইইউ প্রধান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ বাফুফের কর্তা-ব্যক্তিদেরকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এই রুলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাফুফের দুর্নীতি ও অর্থ পাচার বিষয়ে কোন ধরনের মতামত প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

এর আগে সোমবার (১২ জুন) বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের বিষয়ে প্রচারিত পাবলিক ডোমেইনে থাকা ভুয়া ও মানহানিকর তথ্য অপসারণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়।

আবেদনে কাজী সালাউদ্দিনের মৌলিক অধিকার হিসেবে মর্যাদা ও গোপনীয়তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে স্বরাষ্ট্রসচিব, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব এবং বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনকে (বিটিআরসি) কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না ও তার বিরুদ্ধে মানহানি ও যেকোনো ভুয়া তথ্য তৈরি এবং প্রচার থেকে বিরত রাখতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।

একই সঙ্গে ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং পলিসি ২০১৪ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিতে আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সেই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।

এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় পাবলিক ডোমেইনে থাকা কাজী সালাউদ্দিনকে নিয়ে করা মানহানিকর ও ভুয়া তথ্য অপসারণ করতে স্বরাষ্ট্রসচিব ও বিটিআরসির প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে কাজী সালাউদ্দিনের বিষয়ে মানহানিকর ও ভুয়া তথ্য প্রচারে বিরত থাকতে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়।

রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব এবং বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন, একাত্তর টিভি, একাত্তর টিভির ক্রীড়া বিভাগের ইনচার্জ এহসান মাহমুদ, যুগান্তরের সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক মোজাম্মেল হক চঞ্চল, গ্লোবাল স্পোর্টসের সমন্বয়ক শাকিল মাহমুদ চৌধুরী, নীলফামারী জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি আরিফ হোসেন মুন, একাত্তর টিভির ক্রীড়া সাংবাদিক মেহেদী নাইম, পার্থ বণিক, মাহমুদুল হাসান সজিব, অর্ণব বাপ্পী, এহতেশাম সবুজ, মেহেদী হাসান, ফাহিম হাসান, রিয়াসাদ আজিম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, কোহিনুর কনাকে বিবাদী করা হয়।

ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট এ বিষয়ে মতামত প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। দুই দিন শুনানি শেষে আদালত বুধবার এই আদেশ দেন।

XS
SM
MD
LG