অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরের মাঝেই অগ্নিগর্ভ মণিপুর নিয়ে বিবৃতি দিলেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী


কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী।
কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী।

গত প্রায় ৫০ দিন ধরে উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুর জনজাতি দাঙ্গায় কার্যত অগ্নিগর্ভ হয়ে রয়েছে। জাতিদাঙ্গার কারণে মৃত্যু মিছিল চলছে। কয়েক হাজার মানুষ পরিবার নিয়ে ঘর ছাড়া। এ হেন অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন একেবারে নীরব, তখন তাঁর যুক্তরাষ্ট্র সফরের মধ্যে এ নিয়ে বিবৃতি দিলেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী।

তাঁর নাতিদীর্ঘ বিবৃতিতে সনিয়া একবারও প্রধানমন্ত্রীর কথা বলেননি, বিজেপি সরকারের ব্যর্থতার কথাও বলেননি। শুধু কাতর আর্জি জানিয়েছেন, মণিপুরে জাতিদাঙ্গা বন্ধ করে শান্তি ফিরিয়ে আনার। সনিয়া এও বলেছেন, "আমি একজন মা, তাই মা হয়ে মণিপুরের মা বোনেদের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, সন্তান ও পরিবারের কথা ভেবে আপনারা চেষ্টা করুন যাতে শান্তি ফিরিয়ে আনা যায়।"

মণিপুর নিয়ে সনিয়া গান্ধীর বিবৃতি প্রকাশের এই সময় নির্বাচন তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। মঙ্গলবার ২০ জুন নিউ ইয়র্কে গিয়ে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে অনাবাসী ভারতীয়দের তাঁকে নিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনার ছবি বিজেপি ও সরকারি গণমাধ্যম সোশাল মিডিয়া দিয়েছে। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে টেসলা ও টুইটার কর্তা ইলন মাস্ক-এর ছবিও সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ইলন মাস্ক বলছেন, তিনি মোদীর ফ্যান।

সার্বিক এই পরিস্থিতির মধ্যে সনিয়া যেভাবে মণিপুর নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন, তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের নজর এড়াবে না বলেই মনে করছে কংগ্রেস। সাবেক জাতীয় দলের নেতারা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েও মণিপুর নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে মোদীকে।

পর্যবেক্ষকদের মত, সনিয়া গান্ধী এখন কংগ্রেস সভানেত্রী নেই। কিন্তু তার রাজনৈতিক ওজন এখনও খুব একটা কম নয়। একদা ইউপিএ সভানেত্রী এখনও কোনও কথা বললে তা সর্বস্তরে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হয়।

পর্যবেক্ষকদের মতে, সবটাই ধারণা তৈরির খেলা চলছে। বিজেপি দেখাতে চাইছে মোদী বিশ্ব দরবারে কতটা জনপ্রিয় নেতা। আর কংগ্রেস বোঝাতে চাইছে, একদিকে যখন মণিপুর জ্বলছে তখন সেদিকে না তাকিয়ে সানন্দে বিদেশ ভ্রমণে বেরিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কোনও সংবেদনশীলতা নেই।

মণিপুরে বিজেপি সরকার রয়েছে। কেন্দ্রেও বিজেপি সরকার। কর্নাটক ভোটের পর মণিপুরে গিয়ে তিন দিন ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। সেখানে সেনা ও আধা সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও হত্যালীলা চলছে। খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা।

মণিপুর নিয়ে এই সময়ে বক্তব্য প্রকাশ আসলে তাঁর রাজনৈতিক বিচক্ষণতারই প্রকাশ মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

XS
SM
MD
LG