অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি আমদানিতে বছরে ১ হাজার কোটি ডলার প্রয়োজন—সিপিডি


সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) লোগো
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) লোগো

বাংলাদেশের বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) জানিয়েছে, বাংলাদেশের বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য প্রাথমিক জ্বালানি আমদানি করতে বছরে ১ হাজার কোটি (ইউএস) ডলার ব্যয় করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) এক সেমিনারে এই তথ্য জানায় সংস্থাটি। রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে চ্যালেঞ্জ: প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট কী সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবে? শিরোনামে এই সেমিনার আয়োজন করে সিপিডি।

থিঙ্কট্যাংক বলেছে, প্রতি মাসে ৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার প্রয়োজন হবে।

সেমিনারে বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসেন তাঁর বক্তব্যে বলেন, “সরকার আমদানি-নির্ভর জ্বালানি নীতি অনুসরণ করায় ২০২৫ সালে এই ব্যয় ২ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত হবে”।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এই বিষয়ে একটি উপস্থাপনা করতে গিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন, সরকারের আমদানিনির্ভর ভুল নীতির কারণে চলমান বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট আগামী দিনে আরও ঘনীভূত হবে।

খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করলেও সে লক্ষ্য অর্জনে কোনো বিশ্বাসযোগ্য কর্মসূচি নেই। বরং এখন লক্ষ্য পরিবর্তন করে বলা হয়েছে, ২০৪১ সালের মধ্যে ক্লিন এনার্জি থেকে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।

সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রকৌশল অনুষদের (এফই) ডিন প্রফেসর ড. এম শামসুল আলম, ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর খসরু মো. সেলিম।

মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের তীব্র সংকটে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মূল্য বৃদ্ধি সত্ত্বেও, শিল্পগুলোকে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ ঘন্টা লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডলার সংকট মূল সমস্যা যার, জন্য প্রাথমিক জ্বালানি যেমন এলএনজি, ফার্নেস অয়েল এবং কয়লা আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না। নীতিনির্ধারকেরা কয়লা ও গ্যাসের মতো দেশীয় উৎস থেকে প্রাথমিক জ্বালানি উৎপাদনের দিকে নজর দেননি।

বদরুল ইমাম বলেন, একজন আন্তর্জাতিক পরামর্শক বিদ্যমান ক্ষেত্র থেকে গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করেছেন। কিন্তু সরকার সেই সুপারিশকে পুরোপুরি উপেক্ষা করে জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় এলএনজি আমদানিতে চলে যায়।

ইজাজ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের উচিত বছরে অন্তত ২৫টি কূপ খনন করা।

শামসুল আলম বলেন, জ্বালানি খাতে জরুরি তহবিল সহায়তা দিতে সরকারকে মূল্য স্থিতিশীলতা তহবিল গঠনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা করা হয়নি। বরং নিয়ম লঙ্ঘন করে গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের অর্থ অবৈধভাবে এলএনজি আমদানিতে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

XS
SM
MD
LG