অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

শর্ত না মানলে ভারতের পাটনায় বিজেপি বিরোধী মহাসম্মেলন যোগ না দেওয়ার আচমকা হুমকি কেজরিওয়ালের


শর্ত না মানলে ভারতের পাটনায় বিজেপি বিরোধী মহাসম্মেলন যোগ না দেওয়ার আচমকা হুমকি কেজরিওয়ালের
শর্ত না মানলে ভারতের পাটনায় বিজেপি বিরোধী মহাসম্মেলন যোগ না দেওয়ার আচমকা হুমকি কেজরিওয়ালের

আচমকাই শুক্রবার ২৩ জুন বিহারের পাটনায় ভারতের কেন্দ্রে বিজেপি সরকার বিরোধী দলগুলির সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে আম আদমি পার্টি। কিন্তু বৈঠক শুরুর আগে বৃহস্পতিবার ২২ জুন রাতে দিল্লিতে রাজ্য সরকারের ক্ষমতায় থাকা কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি হুঁশিয়ারি দিয়েছে, তাদের দাবি না মানা হলে তারা বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করবে। কেজরিওয়ালের দলের দাবি, শুক্রবারের বৈঠকে কংগ্রেসকে জানাতে হবে তারা দিল্লি অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতা করতে আপের পাশে থাকবে কী থাকবে না। আপের হুঁশিয়ারিতে বিচলিত বাকি দলগুলি। প্রায় সব নেতাই পাটনায় পৌছে গিয়েছেন। বৈঠকে আহ্বায়ক নীতীশ কুমারের সঙ্গে কেজরিওয়ালের এক দফা বৈঠকও হয়েছে বৃহস্পতিবার রাতে।

মঙ্গলবারই এই ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের উদ্দেশে তাঁর আর্জি ছিল সম্মেলনের শুরুতে কেন্দ্রীয় সরকারের জারি করা দিল্লি অর্ডিন্যান্স নিয়ে আলোচনা করা হোক। যদিও জেডিইউ নেতৃত্ব বুধবারই আভাস দিয়েছে, কোনও একটি রাজ্যের প্রশাসনিক বিষয় পাটনার সম্মেলনের আলোচ্য হতে পারে না। সভা শুরুর পর বাকি দলগুলির মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে মণিপুরের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নিয়ে প্রস্তাব নেওয়া হবে।

আম আদমি পার্টির এক শীর্ষ কর্তার কথায়, "নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘনের সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত হল দিল্লির অর্ডিন্যান্স, যেটির ক্ষমতা বলে দিল্লির রাজ্য সরকারের হাত থেকে অফিসারদের ট্রান্সফার-পোস্টিং কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের হাতে নিয়েছে।" কেজরিওয়ালের বক্তব্য, এমন সিদ্ধান্ত আগামী দিনে কেন্দ্র যে কোনও রাজ্যের ক্ষেত্রেই করতে পারে। কেউ নিরাপদ নয়। তাঁর কথায়, "দিল্লিতে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে যে অফিসাররা মন্ত্রীদের কথা শুনছেন না। তাঁরা উপরাজ্যপালের ঈশারায় কাজ করছেন। বকলমে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় শাসন কায়েম করা হয়েছে।"

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই তিনি সুপ্রিম কোর্টে চালিয়ে যাবেন। তবে বিষয়টি অনেক বেশি সাংবিধানিক। তাই বিরোধী দলের সম্মেলনে এই বিষয়ে গোড়াতে আলোচনা চাই।" ক’দিন আগেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, রাজ্যসভায় বিলটি মোদী সরকার পাশ করাতে না পারলে তা হবে লোকসভা ভোটের আগে সেমিফাইনালে বিরোধীদের জয়।

কেজরিওয়ালের এই বক্তব্য নিয়ে বিরোধী শিবিরের কোনও নেতা এখনও প্রতিক্রিয়া না দিলেও বিভিন্ন দল সূত্রের খবর আপ সুপ্রিমোর অবস্থান ঘিরে কংগ্রেসের উপর বাড়তি চাপ তৈরি হল সন্দেহ নেই। কারণ, অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতায় এখনও পর্যন্ত কংগ্রেস তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি।

বৃহস্পতিবার রাতে আপ সূত্র থেকে বলা হয়, কংগ্রেস পাটনার বৈঠকে অর্ডিন্যান্স নিয়ে কোনও কথা না বললে তাদের নেতা কেজরিওয়াল বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে আসবেন। বিশেষজ্ঞদের মতে কেজরিওয়ালের অঙ্ক, সব বিরোধী দল একজোট হলে রাজ্যসভায় অর্ডিন্যান্স পাশ করাতে পারবে না মোদী সরকার। কিন্তু দিল্লি ও পাঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেসের আপত্তির মুখে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে এবং রাহুল গান্ধী দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে এই বিষয়ে আলোচনার সময়ও দেননি। কেজরিওয়ালের বক্তব্য, বিরোধী ঐক্যের কথা বলা কংগ্রেসকে অর্ডিন্যান্স নিয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।

পর্যবেক্ষক মহলের খবর, কংগ্রেসকে অবস্থান স্পষ্ট করতে কেজরিওয়াল পাটনার বৈঠক নিয়ে মোক্ষম চাল দিয়েছেন। তিনি তাই দাবি তুলেছেন, বৈঠকের শুরুতেই অর্ডিন্যান্স নিয়ে সব দল তাদের মতামত জানাক। প্রসঙ্গত, কংগ্রেস বাদে অধিকাংশ বিরোধী দলই কেজরিওয়ালকে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে।

XS
SM
MD
LG