অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে ভারতে পাটনায় বিজেপি বিরোধী দলের বৈঠকের পরেই বিস্ফোরক আপ


ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল।
ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল।

কংগ্রেসের সঙ্গে সংঘাতের হুঁশিয়ারি দিয়েই ভারতের বিহারের পাটনায় কেন্দ্রের বিজেপি বিরোধী দলগুলির মহাসম্মেলনে যোগ দিতে পৌঁছেছিলেন আম আদমি পার্টির প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দিল্লি থেকে পাটলিপুত্র যাওয়ার আগে কেজরিওয়াল স্পষ্ট বলেছিলেন, আমলা বদলের অধ্যাদেশ নিয়ে কংগ্রেস যদি আপের পাশে না থাকে তাহলে নীতীশ কুমারের বাড়ির বৈঠক থেকে আপ বেরিয়ে আসবে। শুক্রবার ২৩ জুনের বৈঠকে তা অবশ্য হয়নি। পুরো মিটিংয়েই ছিলেন কেজরিওয়াল, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিং মান এবং আপ সাংসদ রাঘব চাড্ডা। কিন্তু তারপর যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন না তাঁদের কেউ। তখনই আন্দাজ করা গিয়েছিল কিছু একটা হয়েছে। তারপরই আপ-এর তরফে যে বিবৃতি দেওয়া হল তা কার্যত বিস্ফোরক। বিশেষজ্ঞদের মতে, যে ঐক্যের ছবি দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন নীতীশ কুমার, লালুপ্রসাদ যাদব, রাহুল গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এমকে স্ট্যালিনরা—সেই তালটা কেটে গেছে এই বিবৃতিতে।

এদিন আপ তাদের বিবৃতিতে লিখেছে, পাটনার বৈঠকে ১৫টি দল উপস্থিত ছিল। তাদের মধ্যে ১২টি দলের রাজ্যসভায় প্রতিনিধি আছে। দিল্লির কালা অর্ডিন্যান্স নিয়ে ১১টি দল জানিয়েছে তারা রাজ্যসভায় সরব হবে, প্রতিবাদ করবে, আপ-এর পাশে দাঁড়াবে। কেবলমাত্র কংগ্রেস চুপ থেকেছে।

আপ-এর বিবৃতিতে এও লেখা হয়েছে, "কংগ্রেসের উদ্দেশ্য নিয়েই আমাদের সন্দেহ রয়েছে। এখন তারা ঠিক করুক, দিল্লির মানুষের পাশে দাঁড়াবে নাকি নরেন্দ্র মোদীর পাশে থাকবে।"

কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক করেছিল, দিল্লির আমলাদের বদলি করার বিষয়টি তারাই চূড়ান্ত করবে। কেজরিওয়াল সরকার আপত্তি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল। শীর্ষ আদালত কেন্দ্রের নির্দেশিকা খারিজ করে দিয়ে বলে রাজ্য সরকারের আমলাদের বদলি রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে। শীর্ষ আদালতের রায়ের পরেও কেন্দ্র অধ্যাদেশ জারি করে বদলির ব্যাপারে নিজেদের কর্তৃত্ব রাখে।

শুক্রবার সকালে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেছিলেন, "সংসদের বাদল অধিবেশনের আগে যখন সমস্ত বিরোধী দলের বৈঠক হবে তখনই কংগ্রেস তার বক্তব্য জানাবে। পাটনার বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হওয়ার অবকাশ নেই।"

পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, কংগ্রেসের ভোট ভেঙেই আপ-এর উত্থান। দিল্লি থেকে পাঞ্জাব—সর্বত্রই এক। ফলে কংগ্রেসের পক্ষে আপ-এর সঙ্গে সমঝোতা করা মুশকিল। একই কারণে তেলেঙ্গানার শাসকদল ভারত রাষ্ট্র সমিতির সঙ্গেও কংগ্রেসের বোঝাপড়া হওয়া মুশকিল। দিল্লিতে প্রথম আম আদমি পার্টির সরকার গঠনের সময়ে কংগ্রেস সমর্থন দিয়েছিল। কিন্তু দলের অনেক নেতাই মনে করেন, সেটা ছিল ঐতিহাসিক ভুল।

নীতীশের বাড়ির বৈঠক থেকেই ঠিক হয়েছে আগামী মাসের ১০-১২ তারিখের মধ্যে যে কোনও একদিন হিমাচল প্রদেশের সিমলায় বিরোধী দলগুলি ফের একবার বৈঠকে বসবে। সেখানে ২০২৪-এ বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের চূড়ান্ত ফর্মুলাও ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু আপ জানিয়ে দিয়েছে, কংগ্রেস যদি আপ-এর পাশে না দাঁড়ায় তাহলে আপ-ও কংগ্রেস যে জোটে থাকবে সেখানে যুক্ত হবে না।

XS
SM
MD
LG