অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রের সর্বদলীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়ে কংগ্রেস-এর ঘোষণা ‘নো মোদী, নো মিট’


ভারতের মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রের সর্বদলীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়ে কংগ্রেস-এর ঘোষণা ‘নো মোদী, নো মিট’
ভারতের মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রের সর্বদলীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়ে কংগ্রেস-এর ঘোষণা ‘নো মোদী, নো মিট’

ভারতের উত্তর-পূর্বের মণিপুরের জনজাতি দাঙ্গা বিধ্বস্ত পরিস্থিতি নিয়ে অবশেষে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছে কেন্দ্র। , শনিবার ২৪ জুন এই বৈঠক হবে। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইজিপ্টে থাকবেন। সর্বদল বৈঠকে স্বভাপতিত্ব করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

এই বৈঠক নিয়ে কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে, পাহাড়ি রাজ্যটিতে অশান্তি শুরুর ৫২ দিনের মাথায় বৈঠক হতে যাচ্ছে। সেই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কেন থাকবেন না? তিনি বিদেশে থাকার সময় কেন এই বৈঠক ডাকা হল?

"প্রধানমন্ত্রী মণিপুর নিয়ে নীরব, বৈঠকেও থাকবেন না। এর থেকে প্রধানমন্ত্রীর মন বোঝা যায় তিনি মণিপুরের সমস্যাকে কী চোখে দেখছেন," শুক্রবার সকালে বলেছেন রাহুল গান্ধী। এদিন তিনি বিহারের পাটনায় বিজেপি বিরোধী দলগুলির মহাবৈঠকে যোগ দেন।

মণিপুরে সংঘর্ষ শুরু হয় গত ৩ মে। সেই থেকে বিরোধী দলগুলি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার দাবি জানিয়ে আসছিল। গোলমাল শুরুর ৫২ দিনের মাথায় বৈঠক হতে যাচ্ছে।

কংগ্রেস মণিপুর নিয়ে লাগাতার আক্রমণের পর বুধবার ২২ জুন মুখ খোলেন স্বয়ং সনিয়া গান্ধী। তারপর গভীর রাতে বৈঠকের কথা জানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী-বিহীন বৈঠক নিয়ে সরব ছিল কংগ্রেস। শুক্রবার সকাল হতেই ফের সরব হয়েছে প্রধান বিরোধী দল।

প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ছাড়া বৈঠক বয়কট করার পক্ষপাতী কংগ্রেস শিবির। তবে এখনও পর্যন্ত বৈঠক বয়কটের কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কংগ্রেস চাইছে, প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বৈঠকের দাবি উত্থাপন করতে। এই ব্যাপারে বাকি দলগুলির সঙ্গে আলোচনা করেই এগোতে চায় তারা। দলের দুই সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ ও কেসি বেণুগোপাল একাধিক টুইটে স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রধান বিরোধী দল চায় ‘নো মোদী নো মিট’।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস-এর নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রথম থেকেই সরব উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যটির অস্থির পরিস্থিতি নিয়ে। প্রধানমন্ত্রীর নীরবতায় বারেবারে সরব হয়েছেন তিনিও।

মণিপুরে ইতিমধ্যে প্রায় ১২৫ জনের প্রাণ গিয়েছে। আহত অসংখ্য। এলাকা ছাড়া প্রায় ৫০ হাজার পরিবার। প্রাণ রক্ষায় আশপাশের রাজ্যে পালিয়েছে বহু পরিবার। বৃহস্পতি ও শুক্রবারও বিক্ষিপ্ত গোলমাল হয়েছে। সংঘর্ষে নিরাপত্তা বাহিনীর দুই জওয়ান গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

অথচ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। মোদীর নীরবতা এবং শাহের মন্ত্রকও কেন এতদিন পর সর্বদলীয় বৈঠক ডাকল তার স্পষ্ট কোনও ব্যাখ্যা পায়নি রাজনৈতিক মহল। মণিপুরের একাধিক বিরোধী দল শুধু নয়, বিজেপির বিধায়কেরা পর্যন্ত দিল্লি গিয়ে ধর্না দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিতে চেয়েছেন। কিন্তু সাড়া পাননি।

সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধীরাও। বিশেষ করে কংগ্রেস প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলে সর্বদলীয় বৈঠক করে পরিস্থিতি পর্যালোচনার দাবি জানিয়ে আসছিল। মণিপুরের প্রাক্তন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী ইবোবি সিং দিল্লি গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চান। তিনি কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম, সিপিআই, জেডিইউ এবং আপ-এর প্রতিনিধিদের স্বাক্ষর সম্বলিত চিঠি পাঠান প্রধানমন্ত্রীকে। কিন্তু মোদীর অফিস নিরুত্তর থেকেছে।

বিরোধীদের কথায় প্রতিক্রিয়ক দেননি অমিত শাহও। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও' ব্রায়েন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সংসদীয় কমিটিকে চিঠি দেন অবিলম্বে মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য। কমিটির চেয়ারম্যানও কোনও উদ্যোগ নেননি।

XS
SM
MD
LG