অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বিবাহ সমতার মামলায় দেখতে হবে পরিবারের দ্বারা সমকামী, রূপান্তরকামী মানুষদের উপর ঘটা হিংসার লেন্স দিয়ে: মীনাক্ষী সান্যাল


সমাজকর্মী মীনাক্ষী সান্যাল
সমাজকর্মী মীনাক্ষী সান্যাল

ভারতের শীর্ষ আদালত, সুপ্রিম কোর্টে ম্যারেজ ইক্যুয়ালিটি বা বিবাহ সমতা মামলা সারা দেশেই আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। সমকামী ও রূপান্তরকামী মানুষদের বিবাহের অধিকার বিষয়ক একাধিক পিটিশন দায়ের হওয়ার পর এই মামলার শুনানী শুরু হয় শীর্ষ আদালতে। রাষ্ট্র ও পিটিশনার – উভয় পক্ষের দীর্ঘ সওয়াল-জবাব ইতিমধ্যেই পেশ হয়েছে। এখন অপেক্ষা রায়ের। উল্লেখযোগ্য হল এই মামলা শুধুই ‘সেম সেক্স ম্যারেজ’ বা সমকামী বিবাহের নয়, এখানে বলা হচ্ছে বিবাহে সমতার কথা এবং পিটিশনারদের একাংশের বক্তব্যে উঠে এসেছে জন্মসূত্রে যে পরিবার তার তরফে সমকামী, রূপান্তরকামী মানুষদের উপরে যে হিংসা সংঘটিত হয় ও তার বিপ্রতীপে দাঁড়িয়ে এলজিবিটিকিউআই+ গোষ্ঠীর মানুষদের ‘চোজেন ফ্যামিলি’র আইনি স্বীকৃতির বিষয়টি।

ভয়েস অফ আমেরিকা এই পরিপ্রেক্ষিতে কথা বলেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে এই মামলার অন্যতম পিটিশনার ক্যুইয়ার নারীবাদী সমাজকর্মী মীনাক্ষী সান্যাল(মালবিকা)-র সঙ্গে।

ভয়েস অফ আমেরিকা-র পক্ষে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সুদর্শনা চক্রবর্তী।

ভয়েস অফ আমেরিকা: ম্যারেজ ইক্যুয়ালিটি বা বিবাহের সমানাধিকারের এই পিটিশনের বিষয়টি কীভাবে শুরু হয়েছিল? এবং আপনি কেন এক্ষেত্রে পিটিশনার হলেন?

মীনাক্ষি সান্যাল: ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ভারতে সমকামীতাকে ‘ডিক্রিনালাইজ’ করা হয়, অর্থাৎ আইনিভাবে ভারতে সমকামীতা কোনও অপরাধ নয়। এই রায়ের পরে আমাদের মনে হয়েছিল এর পরে কী? আমরা ‘ক্রিমিনাল’ নই এটুকু বলেই কী রাষ্ট্রের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়? তখন হয়তো মনে হয়েছিল অনেক কিছু পাওয়া গেল। কমিউনিটি-র মধ্যেও দীর্ঘদিন একটা নীরবতা ছিল। তারপর আসতে থাকে একটার পর একটা পিটিশন।

আমি বাদে আরও তিন জন ক্যুইয়ার ফেমিনিস্ট অ্যাকটিভিস্ট, যাঁরা দিল্লি, মুম্বই ও বরোদায় আছেন এবং ছ’জন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিটিশনার আছেন। আমাদের পিটিশন-এর আগে প্রায় ১৭, ১৮টা পিটিশন জমা পড়েছিল। তার মধ্যে হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট, ফরেন ম্যারেজ অ্যাক্ট ও স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট-এর আন্ডার-এ এই পিটিশনগুলি জমা পড়েছিল। এর কারণ, মনে রাখা দরকার এলজিবিটিকিউআইএ+ কমিউনিটি হোমোজিনিয়াস নয়, অর্থাৎ সেখানে সবাই এক রকম নয়। লক্ষ্যণীয় বিষয় ছিল, হয়তো দু’জন মানুষ, যাঁরা অনেক দিন ধরে একসঙ্গে আছেন, তাঁরা নিজেদের সম্পর্কের স্বীকৃতি চান, নানাভাবে, তাঁরা একজন হোন, দু’জন হোম, তাঁরা নিজেদের জন্য পিটিশন জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু আমাদের মনে হয়েছিল এই কমিউনিটি-র সেই মানুষেরা যাঁরা সুপ্রিম কোর্ট তো অনেক দূর শহরের সাপোর্ট সিস্টেম পর্যন্তই পৌঁছতে পারেন না অথচ তাঁরা সাঙ্ঘাতিকভাবে অত্যাচারিত হন, তাঁদের নিয়ে কথা বলার কেউ ছিল না।

আমাদের ২০০৮ সালে তৈরি হওয়া একটা জাতীয় নেটওয়ার্ক আছে লেসবিয়ান, বাইসেক্সুয়াল, ইন্টারসেক্স মানুষদের, যেখানে আমরা আমাদের কমিউনিটির নানা বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কথা বলি, এই নেটওয়ার্কে এক সময়ে এমন অবস্থা হয়েছিল যে প্রত্যন্ত গ্রাম, শহর ব্যতিরেকে একাধিক ঘটনার খবর আসতে থাকে। তখন আমাদের মনে হয়েছিল, জন্মসূত্রে যে পরিবার সেই পারিবারিক হিংসার উৎসটা বুঝতে হবে এবং গোটা বিষয়টিকে এই লেন্স দিয়ে দেখতে হবে।

ধরুন, বিয়ের অধিকার যদি আইন করে পাওয়া যায়, তাহলে পরদিন থেকেই কি আমাদের কমিউনিটির মানুষদের উপর হিংসা বন্ধ হয়ে যাবে? তাই এই ভায়োলেন্স-এর লেন্স থেকেই ঢোকার প্রয়োজনীয়তা বুঝে আমাদের একসঙ্গে হওয়া ও পিটিশন দাখিল করা।

ভয়েস অফ আমেরিকা: কেন আপনাদের পিটিশনকে অন্যগুলির থেকে আলাদা বলছেন?

মীনাক্ষী সান্যাল: বিভিন্ন মিডিয়ায়, আলোচনায় বিষয়টিকে সেম-সেক্স ম্যারেজ বলা হচ্ছে, কোথাও এটাকে ম্যারেজ ইক্যুয়ালিটি রাইটস বা বিবাহের সমানাধিকার বলে দেখা হচ্ছে না। মানে বিয়ে যদি একটা অধিকার হয়, তাহলে এই অধিকার সবার জন্য হবে। এবারে হেটেরোসেক্সুয়াল বা বিসমকামী অনেক মানুষ বিয়ে করেন না, তেমনি হোমোসেক্সুয়াল বা সমকামী অনেক মানুষও বিয়ে করেন না। এটা তার সিদ্ধান্ত হবে, রাষ্ট্র ঠিক করে দেবে না যে – তুমি বিয়ে করতে পারো আর তুমি বিয়ে করতে পারো না। সেই জায়গা থেকেই আমাদের মনে হয়েছিল যে এটাকে ম্যারেজ ইক্যুয়ালিটি রাইটস বলা উচিত।

লক্ষ্য করার বিষয় হল, সুপ্রিম কোর্টের শুনানির সময় রাষ্ট্র যেভাবে বলছিল – সমকামীদের বিয়ে করার কী দরকার? ওটা তো একটা পবিত্র প্রতিষ্ঠান, যেটা একমাত্র পুরুষের সঙ্গে নারীর হয়। অর্থাৎ এখানে গূঢ় অর্থ হল বিয়ের উদ্দেশ্য – সন্তান উৎপাদন। সন্তান উৎপাদন কীভাবে হয়? তারজন্য পরিবারের মতো একটা সেট আপ দরকার। এই পরিবার একটা আমরা জন্মসূত্রে পাই আরেকটা বিয়ের সূত্রে পাই। দু’ভাবে পাওয়া পরিবারেরই একটা আঁটোসাঁটো নিয়ম আছে, যেগুলো পরিবারকে অবশ্যই পালন করে চলতে হয় এবং পালন করতে তার পরবর্তী প্রজন্মকে বাধ্য করা হয়। এই যে হেটেরোনর্মাটিভিটি, যা মেনে চলতে বাধ্য করা হয়, সেই জায়গা থেকেই এই বিষয়টির বিশ্লেষণ হওয়া প্রয়োজন বলে আমাদের মনে হয়েছিল।

পরিবারকে একটা অনেক উঁচু জায়গায় রাখা হয়। সিরিয়াল, সিনেমা, সিরিজ – পিরিয়ড ড্রামা থেকে সমসাময়িক যা কিছু, সেখানে পরিবারকে একটা অনেক বড় জায়গায় রাখা হয়।পরিবার চলবে একজনের কথা মতো। এই যে পরিবারতন্ত্র, পুরুষতন্ত্র – এটা একটা সিস্টেম, যাকে অনড় রাখতে হয়। ফলত সেখানে আমাদের মতো মানুষ যদি জন্মে যায়, তাহলে সে মেয়ে হলে তাকে কারেক্টিভ রেপ করা হয়, জবরদস্তি বিয়ে দেওয়া হয়, যা মহামারীতেও বন্ধ হয়নি।

আমাদের কথা ছিল – বিয়ে থাকলে সবার জন্য থাকবে। জানি, এটা একটা অত্যন্ত স্ট্রাকচার্ড জিনিস, পরিবারতন্ত্র। নারীবাদী হিসাবে ব্যক্তিগতভাবে আমার এতে আপত্তি আছে। এই আইন যদি আসে, আমি ব্যক্তিগতভাবে বিয়ে করব না। কিন্তু তার মানে, আমার কোনও অধিকার নেই আমাদের কমিউনিটির কোন মানুষ বিয়ে করবেন আর কোন মানুষ বিয়ে করবেন না সেটা আমরা ঠিক করে দেব। কীভাবে সে তার অধিকারকে ব্যবহার করবে সেটা সম্পূর্ণভাবে তার ব্যাপার। সুতরাং, হয় সবাইকে অধিকার দেওয়া হোক, না হলে বিয়েটাকে উঠিয়ে দেওয়া হোক সবার জন্য।

কারণ নালসা জাজমেন্ট-এ রূপান্তরকামী মানুষদের আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার সময়ে বলা হয়েছিল যে সবাই মানুষ। তাহলে বিয়ের ক্ষেত্রে আমরা কীভাবে মনু্ষ্যেতর হয়ে গেলাম? এইটা ছিল আমাদের পিটিশন-এর একটা বিষয়।

এবার পরিবারের কথা বলতে গেলে বলতে হয় যারা আমাদের মতো ক্যুইয়ার মানুষ, ট্রান্স মানুষ তাঁদের মধ্যে কত মানুষ কত অল্প বয়সে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়। এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে চলে যায়। বাধ্য করা হয় তাঁদের। সেই মানুষেরা যাঁরা একটা বিকল্প সাপোর্ট সিস্টেম তৈরি করেন, সেই মানুষদের কাছে পরিবার কোনটা? আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা – যখন একজন মেয়ে বলছেন, “আমাকে বিয়ে দিও না, আমি নিজের জীবন, একটি ছেলের জীবন নষ্ট করব না,” তাকে বলা হচ্ছে হয় তুমি এক্ষুনি বাড়ি ছেড়ে চলে যাও নাহলে বিয়ে করো। তখন তার কাছে অন্য রাস্তা থাকে না, আগুপিছু না ভেবে অজানার উদ্দেশ্যে তিনি পাড়ি দেন। এমন অসংখ্য উদাহরণ আছে। ফলত, আমার কাছে, আমাদের কাছে কোনটা পরিবার? সেই বাড়িটা না কি যাঁরা তাকে সেই সাপোর্ট সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসছে তাঁরা? যখন একটি মেয়ে এইরকম বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় একটা জায়গায় থাকে তখন হঠাৎ অসুস্থ হলে, হাসপাতালে বন্ড সই করতে হলে হাসপাতাল থেকে বলে, বাড়ির লোক নিয়ে আসুন, আপনারা কারা?

তাই আমরা বলেছি, ‘চোজেন ফ্যামিলি’কে আইনত মান্যতা দিতে হবে, আইনি অধিকার দিতে হবে। আর এটাই ক্যুইয়ার ও রূপান্তরকামী মানুষদের বাস্তব। আমাদের পিটিশন-এ এটা আছে, যা আমাদের মনে হয়েছে দরকার।

স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট-এ একটা ক্লজ আছে যাতে বলা হয়, নোটিফিকেশন ডোমেসাইল অ্যান্ড অবজেকশন। অর্থাৎ যখন ইন্টারফেইথ বিয়ে হয় বিসমকামীদের, তখন যেখানে রয়েছেন সেখানকার ম্যারেজ রেজিস্ট্রার-এর কাছে একটা ফর্ম জমা দিতে হয়, যেখানে ঠিকানার প্রমাণপত্রও দিতে হয়। সমকামী বা ট্রান্স, ক্যুইয়ার মানুষদের ক্ষেত্রে ভাবুন যে এক্ষেত্রে তার ব্যক্তিগত তথ্যের কোনও গোপনীয়তা থাকছে না। যাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যে পালিয়ে বেড়াচ্ছে সে কি মৃত্যুর জন্য ঐ ঠিকানায় নিয়মমাফিক ৩০ দিন থাকবে বাধ্য হয়ে? আমরা তাই পিটিশনে জানিয়েছি এই ক্লজ-টি তুলে দিতে হবে – সমকামী, বিসমকামী নির্বিশেষে।

রাষ্ট্র যেকোনও উপায়ে চাইছে পরিবারের উপর দায়িত্ব চাপিয়ে দিতে। সমাজের মানসিকতাকে রক্ষণশীল করে তুলছে। সামাজিক সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্র এড়িয়ে যেতে চাইছে। ফলে যে রূপান্তরকামী মানুষটি বাড়ির বাইরে কিছু বোঝেন না, তিনি মনে করেন – ‘আমি একটি পরিবার তৈরি করব। কারণ আমি বিয়ে করলে সামাজিকভাবে স্বীকৃতি পাব। আর সামাজিকভাবে স্বীকৃতি পেলে মানুষ আমাকে সম্মান করবে।’ ফলে বিয়ে তাঁদের কাছে অবশ্যই একটা আকাঙ্খার বিষয় হয়ে ওঠে। ফলে এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমরা পিটিশনে বলেছি রাষ্ট্রকে লিঙ্গ ও যৌন পরিচিতি নির্বিশেষে সমস্ত নাগরিকের সামাজিক সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে।

ভয়েস অফ আমেরিকা: আইনি স্বীকৃতি পেলেই রাতারাতি হিংসা থামবে না। সেক্ষেত্রে আর কী করণীয় বলে মনে করেন?

মীনাক্ষী সান্যাল: পিটিশনে আমরা বারবার যেটা বলার চেষ্টা করেছি যে হিংসার লেন্স দিয়ে বিষয়টিকে দেখতে হবে। বিবাহের সমানাধিকার বা ম্যারেজ ইক্যুয়ালিটি বললেই শুধু হবে না। জন্মসূত্রে যে পরিবার তাই ক্যুয়ার, ট্রান্স মানুষদের উপরে হিংসার প্রাথমিক উৎস। তাঁরা এরফলে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন, পরিযায়ী হয়ে যাচ্ছেন, বা সেই বাড়িতেই অন্যভাবে থাকছেন।

বিবাহের সমানাধিকার বললেও, বিসমকামীদের বিয়ে আর সমকামীদের বিয়ের ক্ষেত্রে সবটা কিছুতেই সমান সমান হয় না। তাই বিসমকামীদের সঙ্গে সমকামী মানুষদের বা রূপান্তরকামী মানুষদের বিয়ের সমতার বিষয়টি অতটা সহজ নয়।

শুধু আইন বদল হলেই হবে না। রাষ্ট্রকে আলাদা ভাবেও দায়িত্ব নিতে হবে। বিসমকামীদের বিয়ের ক্ষেত্রে স্বামী বা স্ত্রীর যে সম্পত্তির উপর অধিকারের বিষয়টি থাকে সেটিও সমকামী ও রূপান্তরকামী মানুষদের বিয়ের ক্ষেত্রে কী থাকবে তাও আলোচনায় আসতে হবে। এই যে কথাগুলো শুনানির সময়ে রাষ্ট্রের তরফ থেকে এসেছে যে সমকামী বিয়েতে কে বর কে বৌ, এই সম্পর্ক কীভাবে থাকবে এখানে তো সন্তান থাকবে না – এগুলো নেহাতই গুরুত্বহীন বিষয়। তার থেকে অনেক বেশি জরুরি সামাজিক সুরক্ষা রাষ্ট্র দিচ্ছে কি না সেই বিষয়টি।

ভয়েস অফ আমেরিকা: বিবাহ সমতার মামলার রায়ের বিষয়ে কী বলবেন?

মীনাক্ষী সান্যাল: আমরা আশা করছি জুলাইয়ের শেষ বা আগস্ট-এর শুরুতে এই মামলায় একটা রায় আসবে। কিন্তু আমরা এখন ভীষণই কনফিউজড জা্য়গায় রয়েছি। কিছু স্পষ্ট করে বলা খুবই মুশকিল। যেভাবে আমাদের বক্তব্য শোনা হয়েছে তা নিশ্চিতভাবেই এক ধরনের আশা জাগায়। তবে আশা জাগাচ্ছে বলেই আমরা সব পেয়ে যাব এমনটা ভাবছি না। যদি হয় তাহলে তো খুবই ভালো, আর না হলে আন্দোলনের রাস্তা তো সব সময়ের জন্যই খোলা।

XS
SM
MD
LG