ভারতের দক্ষিণের রাজ্য কেরলে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে ব্রেন-ইটিং অ্যামিবা-র আক্রমণের কারণে। কেরলের স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, দূষিত জলে স্নান করার কারণেই ওই কিশোরের মস্তিষ্কে ঢুকে যায় অ্যামিবা। এই ধরনের মারাত্মক অ্যামিবা-র সংক্রমণ হলে বাঁচার আশা ক্ষীণ হয়ে যায়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, জল থেকে মস্তিষ্কের এই সংক্রমণ অত্যন্ত বিরল। কেরলে এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনের শরীরে এই সংক্রমণ বাসা বেঁধেছে। প্রত্যেকেরই মৃত্যু হয়েছে।
কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছেন দূষিত জল থেকে অ্যামিবার সংক্রমণ ছড়িয়েছে। বিরল অ্যামিবায়োটিক মেনিনগোএনসেফালিটিস রোগে আক্রান্ত হয়েছিল ১৫ বছরের ওই কিশোর। আরও পাঁচ জনের মৃত্যুও হয়েছে সেইভাবেই। জেলা প্রশাসনের তরফে সাধারণ মানুষকে জল নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। কোথাও দূষিত জলে যাতে কেউ স্নান না করেন, তার প্রচার চালানো হচ্ছে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে এই ধরনের অ্যামিবার সংক্রমণে মৃত্যুর খবর শোনা গিয়েছিল। এখন ভারতেও থাবা বসিয়েছে ভয়ঙ্কর অ্যামিবা-ঘটিত রোগ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর নাম নাইগ্লেরিয়া ফোলেরি। অ্যামিবা হল এককোষী প্রাণী। খালি চোখে দেখা যায় না এই প্রাণীকে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অ্যামিবা হল থার্মোফিলিক, উষ্ণ প্রস্রবণ বা গরম জলে এই প্রাণীকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। ১১৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপমাত্রায় ভাল থাকে এই অ্যামিবারা। সে জন্য হট ওয়াটার লেক বা উষ্ণ প্রস্রবণগুলিতে এদের দেখা মেলে অনেক বেশি। শিল্পাঞ্চলের কাছাকাছি এলাকায়, দূষিত জলেও দেখা মেলে এদের। দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার না করা সুইমিং পুল বা ক্লোরিনেটেড নয় এমন বদ্ধ জলে দ্রুত ছড়ায় অ্যামিবা।
ব্রেন-ইটিং অ্যামিবার সংক্রমণ হলে মানুষের স্নায়ুকোষ অকেজো হয়ে যায়। যদি কোনও ভাবে নাক দিয়ে শরীরে ঢুকে পড়ে তাহলেই সোজা মস্তিষ্কের কোষে গিয়ে আঘাত করে। এই অ্যামিবার সংক্রমণে যে রোগ হয় তাকে বলে নাইগ্লেরিয়াসিস বা প্রাইমারি অ্যামিবিক মেনিনগোএনসেফেলাইটিস। জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, পেশির খিঁচুনি দিয়ে উপসর্গ শুরু হয়। দ্রুত অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ড্রাগ না দিলে মস্তিষ্কের কোষ ছিঁড়েখুঁড়ে দেয় এই প্রাণীরা।