অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের রাজধানী দিল্লির বন্যা পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে


ভারতের নয়া দিল্লিতে, ভারী বর্ষার কারণে যমুনা নদীর জলস্তর বৃদ্ধির পর প্লাবিত একটি শ্মশানের ছবি। ৩১ জুলাই, ২০২৩।
ভারতের নয়া দিল্লিতে, ভারী বর্ষার কারণে যমুনা নদীর জলস্তর বৃদ্ধির পর প্লাবিত একটি শ্মশানের ছবি। ৩১ জুলাই, ২০২৩।

ভারতে যমুনা নদীর জলস্তর গত সপ্তাহে বিপদসীমা পেরিয়ে গেছিল। সঙ্গে ছিল লাগাতার বৃষ্টি। এই দুইয়ের ফলে জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল রাজধানী দিল্লির বিস্তীর্ন এলাকা। ফুঁসতে থাকা যমুনার জলে ভেসে গিয়েছিল দিল্লির ৬ জেলা। লালকেল্লা, কাশ্মীরি গেট, এমনকী সুপ্রিম কোর্ট চত্বরেও জল উঠে এসেছিল। অবশেষে রবিবার ১৬ জুলাই থেকেই একটু একটু নামতে শুরু করেছে যমুনার জল। সোমবার শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, খুব শিগগিরই বিপদসীমার নীচে নেমে যাবে জলস্তর।

রবিবার রাত ১১টা নাগাদ ওল্ড রেলগেট ব্রিজের কাছে যমুনার জলের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ২০৫.৫০ মিটার। বিপদসীমা হল ২০৫.৩৩ মিটার। ফলে আর অল্প সময়ের মধ্যেই জলস্তর বিপদসীমার নীচে নেমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। রবিবার রাত ৮টা নাগাদ জলস্তরের উচ্চতা ছিল ২০৫.৫৬ মিটার। দিল্লির রাজস্ব মন্ত্রী অতিশি জানিয়েছেন, যাঁরা বন্যার কারণে গৃহহীন, তাঁদের জন্য জায়গায় জায়গায় ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। "এই মুহূর্তে আমাদের প্রধান কাজ হল সব কিছু যত দ্রুত সম্ভব স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা," জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন, পাম্প বসিয়ে জল ছেঁচে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে, তবে এখনও বেশিরভাগ রাস্তাই জলমগ্ন হয়ে রয়েছে।

অতিশি, দিল্লির লেফটেন্যান্ট জেনারেল ভিকে সাক্সেনা, এবং মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল রবিবার রাজঘাট, শান্তিবন এবং লালকেল্লা এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তারপরে মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল জানান, বন্যাকবলিত পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্য করা হবে। একটি ট্যুইটে তিনি লেখেন, "যমুনার তীরে অজস্র দরিদ্র মানুষের বাস ছিল, যাঁরা বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কিছু কিছু পরিবারের তো সর্বস্ব ভেসে গেছে বন্যার জলে।" তিনি যোগ করেন, প্রতিটি বন্যা দুর্গত পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।

এছাড়া যাঁরা, ভোটার কার্ড এবং আধার কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথি হারিয়ে ফেলেছেন, তাঁদের জন্য বিশেষ ক্যাম্প খোলা হবে। যে সমস্ত শিশুদের বই-খাতা এবং স্কুলের পোশাক জলে ভেসে গেছে, স্কুলের হয়ে সরকার তা সরবরাহ করবে।

উল্লেখ্য, এর আগে ১৯৭১ সালে শেষবার এমন বিধ্বংসী বন্যা হয়েছিল দিল্লিতে। ৪৫ বছর আগের সেই বন্যায় প্রায় একই রকম ফুঁসে উঠেছিল যমুনা। তবে এবারের পরিস্থিতি আরও ভয়ানক। প্রবল বন্যায় রিং রোডের সিভিল লাইন, মঞ্জু কা টিলা, কাশ্মীরি গেট সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এই এলাকা মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাসভবন থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে। কাশ্মীরি গেট লাগোয়া এলাকাতেই রয়েছে দিল্লি বিধানসভা। বোট ক্লাব, মনস্ট্রি মার্কেট, যমুনা বাজার, গীতা ঘাট, খাড্ডা কলোনি, থেকে শুরু করে ওয়াজিরাবাদ, ময়ূর বিহার, সব এলাকাই জলমগ্ন। তবে সোমবার ধীরে ধীরে যমুনার জল নেমে জলমগ্ন এলাকাগুলি জলমুক্ত হয়েছে।

XS
SM
MD
LG