অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

সিয়াচেনে সেনাচৌকিতে বিধ্বংসী আগুন, ঝলসে মৃত সেনা অফিসার, জখম আরও তিন


ভারতের সেনা অফিসার ক্যাপ্টেন অংশুমান সিং
ভারতের সেনা অফিসার ক্যাপ্টেন অংশুমান সিং

পাক অধিকৃত কাশ্মীর লাগোয়া সিয়াচেন হিমবাহের একটি সেনা বাঙ্কারে বিধ্বংসী আগুন লাগল বুধবার ১৯ জুলাই। পৃথিবীর কয়েকটি দুর্গমতম বিন্দুর মধ্যে সিয়াচেন তার মধ্যে একটি। সেখানেই অতন্ত্র প্রহরারত থাকেন ভারতের সেনা জওয়ানরা। জানা গেছে, এই অগ্নিকাণ্ডে এক সেনা অফিসারের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর জখম আরও তিন সেনা আধিকারিক।

অগ্নিকাণ্ডে মৃত সেনা অফিসারের নাম ক্যাপ্টেন অংশুমান সিং। সেনা সূত্রে খবর, এদিন ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ সিয়াচেন হিমবাহের সেনাচৌকিতে আগুন লাগে। সহকর্মীদের বাঁচাতে গিয়েই ঝলসে যান ক্যাপ্টেন আংশুমান। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয় তাঁর। জখম সেনা আধিকারিকদের চিকিৎসা চলছে।

সেনা সূত্রে খবর, আগুন এতটাই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে যে সকলে বেরিয়ে আসতে পারেননি। ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টের সমস্যাও হয়েছে অনেকের। ভারতীয় সেনার উত্তরাঞ্চলীয় কমান্ডের তরফে জানানো হয়েছে, হিমাঙ্কের নীচে প্রতিকূল আবহাওয়ায় টিঁকে থাকার জন্য সেনাচৌকি এবং বাঙ্কারগুলিতে আগুন জ্বালানো হয়। সেই আগুন থেকেই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। পরিস্থিতি আপাতত স্থিতিশীল আছে বলেই সেনা সূত্রে জানা গেছে।

চারিদিকে ১৮ থেকে ২০ হাজার ফুট উঁচু পাহাড়। আদিগন্ত বিস্তৃত বরফ। পশ্চিমতম প্রান্ত ছুঁয়েছে হিমালয়ের শেষ বিন্দুকে। সে দিক থেকেই বাঁক নিয়ে এই হিমবাহের পূর্ব দিকে এসে শেষ হয়েছে কারাকোরাম পর্বতমালা। পৃথিবীর দুই দুর্গমতম পর্বতশ্রেণির মাঝে ৭২ কিলোমিটার জুড়ে শুধুই বরফ। তাপমাত্রা কখনও পৌঁছে যায় মাইনাস ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সারা বছরে সিয়াচেনে প্রায় ৩০-৪০ ফুট গভীরতার বরফ পড়ে ।

১৯৮৪ সাল থেকেই সিয়াচেনে অবস্থান করছে ভারতীয় সেনা। পৃথিবীর উচ্চতম এই যুদ্ধক্ষেত্রে ভারতীয় সেনাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল প্রতিকূল আবহাওয়া। গত তিন দশক ধরে শ’য়ে শ’য়ে সেনার মৃত্যু হয়েছে এই হিমবাহে। বহু মৃত্যু ডেকে আনে ভয়ঙ্কর তুষারঝড়। রয়েছে ক্রিভাসের আতঙ্কও। হিমবাহের কোনও কোনও অংশে গভীর এবং লম্বা ফাটল তৈরি হয় মাঝে মধ্যেই। সেই ফাটল অনেক সময় গ্রাস করে নেয় সবকিছু। বুধবারের ভয়াবহ অগ্নিকান্ড কর্তব্যরত সেনাবাহিনীর সামনে কত বড় চ্যালেঞ্জ থাকে, তাই আবারও সামন্ব নিয়ে এল।

XS
SM
MD
LG