রাজনৈতিক অপরাধ এবং বিত্ত-বৈভবের অশুভ প্রদর্শনী থেকে সমাজকে রক্ষায় ভূমিকা রাখতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। রবিবার (২৩ জুলাই) দুপুরে রাজধানী ঢাকায়, ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ক্র্যাব) ৪০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “আমাদের দেশে এখন তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার প্রবণতা চলছে। যতদিন যাচ্ছে তত এই প্রতিযোগিতা বাড়ছে। এর পেছনে রয়েছে ‘ডেমোনেস্ট্রেশন অফ ওয়েলথ’ বা বিত্ত-বৈভব প্রদর্শনীর মনস্তাত্ত্বিক বিষয়। যেমন; আমার এত সুন্দর বাড়ি, এত সুন্দর গাড়ি; এগুলো ‘ডেমোনেস্ট্রেট’ করা, এটি সমাজকে কলুষিত করছে; অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি করছে।”
তিনি বলেন, “ এই প্রতিযোগিতায় নানাভাবে অর্থ উপার্জন করতে গিয়ে মানুষ অর্থনৈতিক ও সামাজিক অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। তারা অন্যায়ভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়াচ্ছে, মুনাফা লুটছে। যা পুরো সমাজ ও রাষ্ট্রকে কলুষিত করছে।”
এসব কাজ রাষ্ট্রের স্বাভাবিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করছে বলে উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী। এর প্রতিরোধে সাংবাদিকদের ভূমিকা রাখার জন্য আহবান জানান তিনি। সামাজিক অপরাধের পাশাপাশি কিছু ক্ষেত্রে রাজনৈতিক অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে রাজনীতির নামে মানুষ পোড়ানো, মানুষের সহায়-সম্পত্তিতে আগুন দেয়া, পৃথিবীর কোথাও ঘটেছে কি না আমি জানি না। কোনো জায়গায় কমিটি নিয়ে বিরোধ হলে রাস্তা বন্ধ করে দেয়া কি সমীচীন! কমিটি পছন্দ হলো না, বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে তালা লাগিয়ে দিলো, এটি কি সমীচীন! এগুলো কোনোভাবেই সমীচীন নয়।”
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা দেখেছেন নরসিংদীতে বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা মামলায় হাজিরা দিতে গেছেন। তার দলের নেতারা তার ওপর হামলা করছে, তার গাড়ি ভাঙচুর করেছে। রাজনীতির নামে এভাবে মানুষ পোড়ানো, সম্পত্তিতে আগুন দেয়া কিংবা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য অপরের ওপর আক্রমণ পরিচালনা করা, এগুলো রাজনৈতিক অপরাধ।”
তিনি বলেন, “এসব অপরাধের বিরুদ্ধেও লেখা প্রয়োজন এবং তাহলে ক্রাইম রিপোর্টারদের ভূমিকা আরো শাণিত হবে এবং দেশ, সমাজ ও রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।”
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “ঝুঁকিপূর্ণ হলেও, যা সঠিক তা বলতে হবে। তাহলে সমাজ সঠিক পথে হাঁটবে। ক্রাইম রিপোর্টারদের অনেকেই নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, এরপর তারা পিছপা হননি। যারা অতীতে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন এখনো করছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।”
