অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

সংঘাতজনিত খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সংহতি প্রয়োজন: রাষ্ট্রদূত মুহিত


জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বলেছেন, “সংঘাত-জনিত বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা মোকাবেলায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয়। এর জন্য প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সংহতি।”

বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ‘দুর্ভিক্ষ ও সংঘাতজনিত বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা’ শীর্ষক এক উচ্চ পর্যায়ের বিতর্কে এ কথা বলেন তিনি। আগস্টে (২০২৩) নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার অুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।

বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তায়, চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিধ্বংসী প্রভাবের প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রদূত মুহিত এ সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা সামনে তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন যে পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থায় বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার প্রদানসহ বেশ কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছে।

খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার বিরুদ্ধে সম্মিলিত পদক্ষেপ জোরদার করার জন্য, সংঘাতকালে খাদ্যের মূল্য ও খাদ্যে প্রবেশাধিকার-কে প্রভাবিত করে এমন অন্তর্নিহিত কারণগুলোকে মোকাবেলার ওপর জোর দেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।

এই বিষয়ে তিনি আন্তর্জাতিক বাজার উন্মুক্ত রাখতে, অপ্রয়োজনীয় রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা অপসারণ করতে এবং খাদ্য মজুদ ছেড়ে দেয়ার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আহ্বানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান।রাষ্ট্রদূত আব্দুল মুহিত সারা বিশ্বে খাদ্য সরবরাহে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে 'ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ' চালু রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

খাদ্য নিরাপত্তায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব প্রশমনে, বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে সহায়তা করার জন্য দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা, জলবায়ু অর্থায়ন এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ত্বারোপ করেন রাষ্ট্রদূত মুহিত।

দুর্ভিক্ষ ও অনাহার-কে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার নিন্দা জানান রাষ্ট্রদূত মুহিত। তিনি সকল সদস্য রাষ্ট্রকে যুদ্ধের কৌশল হিসেবে অনাহার-কে কাজে লাগানো থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন এবং বিবাদমান পক্ষগুলো-কে সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক নীতিসমূহ মেনে চলার আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রদূত মুহিত দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা রোহিঙ্গা সংকট এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলমান সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গাদের অনুকূলে বরাদ্দ আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের ঘাটতির প্রতি পরিষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন সক্ষম করতে মিয়ানমারে একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানান।

একই সঙ্গে তিনি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত তাদের অনুকূলে মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

XS
SM
MD
LG