অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির জোর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ও কৃতি প্রার্থীদের উপর


লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির জোর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ও কৃতি প্রার্থীদের উপর
লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির জোর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ও কৃতি প্রার্থীদের উপর

বুধবার ৯ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অনাস্থা বিতর্কে বিরোধীদের তোলা প্রশ্নের জবাব দিতে হবে সংসদে। দলীয় সূত্রে খবর, মণিপুর নিয়ে কী বলবেন, সে ব্যাপারে দল ও অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা সেরে নিয়েছেন তিনি। আপাতত প্রধানমন্ত্রী অনেক বেশি ব্যস্ত আগামী লোকসভা নির্বাচনের কৌশল ঠিক করা নিয়ে।

যেমন গত রবিবার ও সোমবার তিনি বিজেপি এবং এনডিএ-র শরিক দলগুলির বেশ কয়েকজন সাংসদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সূত্রের খবর, দুটি বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি চান রাজ্যসভার সাংসদেরা আগামী লোকসভা ভোটে বেশি করে প্রার্থী হন।

বিজেপি সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে পুরনো অনেক মুখ বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গ নতুন করে তোলেননি। কাজকর্ম, আচার ব্যবহার, দল ও সংসদীয় এলাকার সঙ্গে সম্পর্ক ইত্যাদির মাপকাঠিতে বিজেপি ইতিমধ্যে ঠিক করে ফেলেছে কোন কোন এমপি এবার টিকিট পাবেন না। দলের সভাপতি জেপি নাড্ডা হালে একাধিক বৈঠকে বাদের সম্ভাব্য তালিকায় নাম থাকা এমপি-দের সে কথা জানিয়ে দিয়েছেন। তবে তাঁরা আগামী ছয় মাসের মধ্যে নিজেদের শোধরাতে পারলে দল সিদ্ধান্ত বদল করতে পারে।

তবে মোদী চান নতুন প্রার্থী হিসাবে রাজ্যসভার সাংসদদের কয়েকজনকে টিকিট দেওয়া হোক। রাজ্যসভার বেশ কয়েকজন সাংসদ বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় আছেন। তাঁদের অন্যতম হলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন, বাণিজ্যমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল, শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব, পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ পুরি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

নির্মলা এবং জয়শঙ্কর দু’জনই তামিলনাড়ুর মানুষ। আবার দু’জনেই কর্নাটক থেকে রাজ্যসভায় গিয়েছেন। জয়শঙ্করকে প্রায়ই বিদেশে পাড়ি দিতে হয়। ভোটের সময় টানা তিন মাস তার পক্ষে বিদেশ মন্ত্রকের কাজকর্ম বন্ধ রেখে প্রচারে অংশগ্রহণ করা কঠিন। নির্মলার ক্ষেত্রে ততটা সমস্যা হবে না, কারণ, ভোটের সময় অর্থ দফতরের কাজকর্ম অনেকটাই কমে আসে। বিশেষ করে মন্ত্রীরা কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। কর্নাটক বা তামিলনাড়ু যেখান থেকেই প্রার্থী করা হোক না কেন, নির্মলার জয় নিয়ে চিন্তা নেই দলের অভ্যন্তরে।

দলীয় সূত্রের খবর, পীযুষ গোয়েল প্রধানমন্ত্রীর কাছে অমিত শাহের সমান গুরুত্ব পেয়ে থাকেন। রাজ্যসভায় বিজেপির দলনেতা পীযুষ ছিলেন ২০১৪-র লোকসভা ভোটে মোদীর প্রচার টিমের মাথা। দলের তরফে পীযুষকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সেবার। সেই থেকে মহারাষ্ট্রের এই নেতা প্রধানমন্ত্রীর খুবই আস্থাভাজন। তাকে এবার লোকসভায় প্রার্থী করতে পারে বিজেপি।

ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং ভূপন্দ্র যাদবের মধ্যে কেউ একজন বিজেপির পরবর্তী সভাপতি হবেন বলে ঠিক আছে। জেপি নাড্ডার দু’বারের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত তাকে সভাপতির দায়িত্ব পালন করে যেতে বলেছে দল। নাড্ডা নিজেও এখন লোকসভার সদস্য। ফলে ধর্মেন্দ্র এবং ভূপেন্দ্রদেরও লোকসভায় প্রার্থী করা হতে পারে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডবিয়া। তিনি নিজের রাজ্য গুজরাত থেকে রাজ্যসভার সদস্য। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মন্ত্রী মনসুখ প্রধানমন্ত্রীর খুবই আস্থাভাজন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে প্রবীণ নেতা হর্ষবর্ধনকে সরিয়ে কম বয়সি মনসুখকে মন্ত্রী করেন প্রধানন্ত্রী।

বিজেপি সূত্রের খবর, রাজ্যসভার সদস্যদের মধ্যে কৃতী মন্ত্রীদের টিকিট দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বুঝতে পারছে, দশ বছর সরকার পরিচালনার পর নতুন প্রতিষ্ঠান বিরোধিতাকে রুখতে হলে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থী দরকার, যারা একই সঙ্গে স্বচ্ছ এবং কৃতি। শিবসেনা থেকে আসা প্রবীণ নেতা বর্তমানে রাজ্যসভার এমপি নারায়ণ রানে-ও এবার লোকসভায় লড়বেন বলে ঠিক আছে।

XS
SM
MD
LG