অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

রোহিঙ্গা সংকটের চূড়ান্ত সমাধান হলো প্রত্যাবাসন: ওআইসির সহকারী মহাসচিব


রোহিঙ্গা সংকটের চূড়ান্ত সমাধান হলো প্রত্যাবাসন: ওআইসির সহকারী মহাসচিব
রোহিঙ্গা সংকটের চূড়ান্ত সমাধান হলো প্রত্যাবাসন: ওআইসির সহকারী মহাসচিব

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, “ রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান হলো; তাদের ওপর সংঘটিত নৃশংসতার জবাবদিহি নিশ্চিত করণ, তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন অথবা তৃতীয় কোনো দেশে পুনর্বাসন।” বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) ঢাকা সফররত ওআইসি-ইউএনএইচসিআরের (ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা-জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার) যৌথ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় ওআইসির সহকারী মহাসচিব বলেন, “প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের চূড়ান্ত সমাধান।”

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে, মাসুদ বিন মোমেন, এই মর্মান্তিক সংকটের স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করতে জোরালো আন্তর্জাতিক সমর্থন না পাওয়া পর্যন্ত এবং প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার জন্য ওআইসি-ইউএনএইচসিআর যৌথ প্রতিনিধি দলের প্রতি আহ্বান জানান।

ওআইসি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন মানবিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিষয়ক সহকারী মহাসচিব রাষ্ট্রদূত তারিগ আলী বাখেত। আর, ইউএনএইচআরসি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে রয়েছেন খালেদ খলিফা।ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি দল এবং অন্যান্য উন্নয়ন অংশীজনরা ৬ থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করেন।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব উল্লেখ করেন যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও সুরক্ষা দিয়েছে। তিনি রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসন এবং তাদের প্রত্যাবাসনের অধিকার নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ, আঞ্চলিক সংস্থা এবং বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর অর্থবহ সম্পৃক্ততার বিষয়ে বাংলাদেশের অভিপ্রায় পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে প্রাপ্ত মানবিক সহায়তার প্রশংসা করেন।

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ-এর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে, ওআইসি ও ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধি দলের সফরের প্রশংসা করেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ। তিনি বলেন, “প্রতিনিধি দল এই সংকট সম্পর্কে প্রত্যক্ষ ধারণা অর্জনের পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা লাঘবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত প্রচেষ্টা প্রত্যক্ষ করেছে।”

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব উৎস থেকে ৩৫ কোটি ডলার ব্যয়ে বাস্তবায়িত ভাসানচর প্রকল্প সম্পর্কে প্রতিনিধি দলকে অবহিত করেন।

ওআইসি মহাসচিবের সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করে পররাষ্ট্র সচিব গাম্বিয়ার দায়ের করা আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলার প্রতি দৃঢ় সমর্থন এবং ওআইসির বিভিন্ন ফোরামে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোকপাত বজায় রাখার আন্তরিক প্রচেষ্টার জন্য এর মহাসচিবের প্রশংসা করেন।

গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলায় অপর্যাপ্ত অর্থায়ন এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের জন্য মানবিক কার্যক্রমে সহায়তা হ্রাস পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি ওআইসির পাশাপাশি উপসাগরীয় দেশগুলো-কে রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানান।

বৈঠকে ওআইসির সহকারী মহাসচিব রোহিঙ্গাদের আশ্রয়, সুরক্ষা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রশংসা করেন। তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে গঠনমূলকভাবে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়ে ওআইসির অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “প্রত্যাবাসনই এ সংকটের চূড়ান্ত সমাধান।”

এর আগে ওআইসি ও ইউএনএইচসিআর এর প্রতিনিধি দল ১০ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে মুখ্য সচিব কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর এর বিষয়ে সফররত প্রতিনিধি দলের কাছে তুলে ধরেন এবং জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানে (জেআরপি) আরো অবদান রাখার আহ্বান জানান।

ওআইসি ও ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধি দলে ছিলেন, মিয়ানমারে নিযুক্ত ওআইসির বিশেষ দূত ইব্রাহিম আহদি খাইরাত, ইসলামিক সলিডারিটি ফান্ড (আইএসএফ), কাতার ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (কিউএফএফডি), কুয়েতের যাকাত হাউস এবং কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট এর (কেএফএইডি) প্রতিনিধিগণ।

XS
SM
MD
LG