অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া সব মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান ১৯ আন্তর্জাতিক সংস্থার


বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া সব মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান ১৯ আন্তর্জাতিক সংস্থার
বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া সব মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান ১৯ আন্তর্জাতিক সংস্থার

বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (ডিএসএ) দায়ের হওয়া সব মামলা বাতিলের আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং মানবাধিকারের জন্য কাজ করা ১৯টি আন্তর্জাতিক সংস্থা। একই সঙ্গে সংস্থাগুলো এই আইনের মামলায় আটক সকলকে মুক্তি দেওয়ার দাবিও জানিয়েছে।

বুধবার (৩০ অগাস্ট) এক সম্মিলিত এক চিঠিতে এই আহ্বান জানায় সংস্থাগুলো।

চিঠিতে সংবাদ প্রকাশের জেরে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভির ঢাকা কার্যালয়ের নিজস্ব প্রতিবেদক অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা প্রত্যাহারেরও আহ্বান জানানো হয়।

রাজারবাগ দরবার শরিফের কার্যকলাপের ওপর আরটিভির সাংবাদিক অধরা ইয়াসমিনের ভিডিও প্রতিবেদনের তদন্তের পরে তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের পর এই চিঠি দেওয়া হয়।

রাজারবাগ দরবার শরিফের সদস্যরা অধরা ইয়াসমিনকে হয়রানি করার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনগুলোর জোট। তারা অভিযোগ করেছে, এ বছরের জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে তাঁকে অননুমোদিত নজরদারি, হুমকি ও ভয় দেখানো হচ্ছে। এই পদক্ষেপগুলো তাঁর অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক বলে মনে করা হয়।

দ্রুত এসব হুমকির তদন্ত করার ওপর জোর দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো। পাশাপাশি তারা দোষীদের জবাবদিহির আওতায় এনে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও মানসিক শান্তি নিশ্চিত করার ওপরও জোর দিয়েছে।

অধরা ইয়াসমিনের প্রতিবেদনের সঙ্গে সম্পৃক্ত তাঁর সহকর্মী আকরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অভিযোগের তদন্ত বন্ধ করার জন্যও জোটটি বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

কাঞ্চন দাবি করেন, রাজারবাগ দরবার শরিফের নেতা শাকেরুল কবির প্রতারণা করে স্থানীয়দের সম্পত্তি অর্জন করেছেন। জোটটি সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে এই আইনি প্রতিক্রিয়াকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য হুমকি হিসেবে দেখে।

এ ছাড়াও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কর্মরত বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সংগঠন বিজেআইএম (বিভিন্ন বৈশ্বিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশের খবর প্রকাশ করে এমন বাংলাদেশি সাংবাদিকদের একটি প্ল্যাটফর্ম) চিঠিটিকে সমর্থন করেছে এবং কর্তৃপক্ষকে অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত না করার আহ্বান জানিয়েছে।

বিজেআইএমের মুখপাত্র রেদওয়ান আহমেদ বলেছেন, “একটি সমৃদ্ধ গণতন্ত্রের জন্য সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অত্যাবশ্যক। যা মতপ্রকাশ ও সত্য প্রকাশের অনুমতি দেয়। আমরা বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে সাংবাদিকদের হয়রানি বা ভয় দেখানোর জন্য ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা ব্যবহার বন্ধ এবং অধরা ইয়াসমিনের সাংবাদিকতার কাজের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করার আহ্বান জানাচ্ছি”।

সংগঠনগুলো বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে এই আইনের বদলে যে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হচ্ছে, তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে সংগঠনগুলো। চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত আইনটিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশ কয়েকটি দমনমূলক ধারা থাকছে, যেগুলো আগে বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, নাগরিক স্বাধীনতাসহ স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মানবাধিকারকর্মীদের কণ্ঠরোধে ব্যবহার করা হয়েছিল।

চিঠিতে সই করা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল; আর্টিকেল নাইনটিন (দক্ষিণ এশিয়া); এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন; বাংলাদেশি জার্নালিস্ট ইন ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া; ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রজেক্ট; সিভিকাস: ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স ফর সিটিজেন পার্টিসিপেশন; কোয়ালিশন ফর উইমেন ইন জার্নালিজম (সিএফডব্লিউআইজে); কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস; ফোরাম ফর ফ্রিডম এক্সপ্রেশন, বাংলাদেশ; ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড; আইএফইএক্স; ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস (এফআইডিএইচ); ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টস (আইএফজে); ইন্টারন্যাশনাল ওমেন’স মিডিয়া ফাউন্ডেশন; পেন আমেরিকা; পেন বাংলাদেশ; পেন ইন্টারন্যাশনাল; রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস ও রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস।

XS
SM
MD
LG