অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

স্থিতিশীলতার জন্য রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধান মুখ্য বিষয়: আব্দুল মোমেন


উখিয়ার জামতলী শরণার্থী শিবিরের একটি বাজারের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। ২৪ আগস্ট, ২০২২। (ফাইল ছবি)
উখিয়ার জামতলী শরণার্থী শিবিরের একটি বাজারের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। ২৪ আগস্ট, ২০২২। (ফাইল ছবি)

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, “বাংলাদেশ এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, সংযোগ বৃদ্ধি এবং সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সুযোগ-সুবিধা গ্রহণে আগ্রহী।” তিনি আরো বলেন, “ এ অঞ্চলের শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত ও স্থায়ী সমাধান এখন মুখ্য বিষয়।”

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ’স ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক: অপরচুনিটিস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনারের সমাপনী অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ এবং বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর রিজিওনাল স্টাডিজ যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা, সাগর ও মহাসাগরের টেকসই ব্যবহার, ডি-কার্বোনাইজেশন, পরিচ্ছন্ন শক্তি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ, সরবরাহ শৃঙ্খল স্থিতিস্থাপকতা, জনগণের মধ্যে বিনিয়োগ ও সংযোগ স্থাপন এবং একটি টেকসই ও সবুজ ভবিষ্যত গড়ে তোলা বেশিরভাগ দেশের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে রয়েছে।”

তিনি বলেন, “ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য অংশীদারদের মধ্যে দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয় দেখা যাচ্ছে। তাই আসুন, আমরা আমাদের অঞ্চলের জন্য একটি উন্নত ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে আমাদের অভিন্নতা-কে কেন্দ্রীভূত করি।”

ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, বাংলাদেশ ও সমগ্র বিশ্বের জন্য অত্যন্ত কৌশলগত গুরুত্ব বহন করে। যা কয়েকটি ব্যস্ততম সমুদ্র পথ, গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য রুট এবং বিভিন্ন সংস্কৃতি ও সমাজের আবাসস্থল। আব্দুল মোমেন বলেন, “এই অঞ্চল অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং পরিবেশগত সুরক্ষা থেকে নিরাপত্তা পর্যন্ত জটিল ও অভিন্ন চ্যালেঞ্জের আধিক্যের সম্মুখীন হচ্ছে।”

“তবে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে;” উল্লেখ করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া, সহযোগিতা এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা, শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য, সামগ্রিকভাবে বিশ্বের জন্যও অপরিহার্য।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, “আমরা যোগাযোগের মাধ্যমে আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক একীকরণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও সামুদ্রিক নিরাপত্তার মতো অভিন্ন চ্যালেঞ্জ যৌথভাবে মোকাবেলায় আমাদের আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

ড. মোমেন বলেন, “এখন বাংলাদেশ একটি কানেক্টিভিটি হাবে পরিণত হয়েছে; কারণ আমরা বিশ্বাস করি, সংযোগই উৎপাদনশীলতা।” তিনি আরো বলেন, “ভূ-কৌশলগত অবস্থানের সঙ্গে দ্রুত অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের ফলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচ্চতর মনোযোগ আকর্ষণ করতে বাধ্য, যা সাম্প্রতিক সময়ে ঘটেছে। এই অঞ্চলে আমাদের বর্ধিত ভূমিকা এবং দায়িত্বের কথা মাথায় রেখে, আমরা এই অঞ্চলের সমস্ত দেশের সঙ্গে অন্তর্ভুক্তিমূলক সম্পর্ক বজায় রেখেছি।”

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “দীর্ঘায়িত রোহিঙ্গা সংকট; যার উৎপত্তি মিয়ানমারে; কিন্তু বাংলাদেশের ওপর ব্যাপকভাবে চাপ অব্যাহত রয়েছে। এই সংকট পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করবে বলে আশঙ্কা রয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেয়া, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে স্থায়ী প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টা জোরদার না করে, তবে সে আশঙ্কা বাড়বে। এ অঞ্চলের শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য এই সংকটের দ্রুত ও স্থায়ী সমাধান এখন মুখ্য বিষয়।”

আব্দুল মোমেন বলেন, “বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট বা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বিগ-বি উদ্যোগে জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব এ অঞ্চলের জন্য একটি কানেক্টিভিটি হাব তৈরি করছে।আমরা দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দু’টি উপ-অঞ্চলের বৃহত্তর একীকরণের এবং ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে আরও সংযুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় সেতু হয়ে উঠতে আগ্রহী। আমরা আন্তঃসীমান্ত মাল্টিমোডাল সংযোগ বাড়াতে এবং এই ধরনের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে এগিয়ে নিতে আরো আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের জন্য প্রস্তুত।”

XS
SM
MD
LG