বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ সম্মেলন উপলক্ষে ভারত সফরকালে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের পর তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। শেখ হাসিনা শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লি পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টা পর সন্ধ্যায় মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে জি-২০ নেতাদের সম্মেলনে যোগ দিতে তিন দিনের ভারত সফরে শুক্রবার নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ ফ্লাইট সকালে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে। সরকারি সময়সূচি অনুযায়ী, ফ্লাইটটি দুপুর সোয়া ১টায় দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এসব কথা জানিয়ে বলেন, বৈঠকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আব্দুল মোমেন বলেন, “কৃষি গবেষণায় সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি এবং বাংলাদেশি টাকা ও ভারতীয় রুপির (দুই দেশের সাধারণ মানুষ) মধ্যে লেনদেন সহজ করার বিষয়ে তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে”।
শেখ হাসিনা দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের জন্য বিকেল সাড়ে ৫টায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে যাবেন এবং সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সেখানে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠক হবে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের দুটি অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) খেকে 'এক পৃথিবী, একটি পরিবার এবং একটি ভবিষ্যৎ' প্রতিপাদ্য নিয়ে নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানের ভারত মন্ডপম সেন্টারে শুরু হতে যাচ্ছে।
‘এক পৃথিবী’ ও 'এক পরিবার' শিরোনামের দুটি সেশনে গ্লোবাল সাউথে জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড-১৯-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং ইউরোপে চলমান যুদ্ধের কারণে জ্বালানি, খাদ্য ও সারের বৈশ্বিক সরবরাহের ব্যাঘাতের মতো বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের ওপর আলোকপাত করবেন শেখ হাসিনা। এ ছাড়া সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিশ্ব নেতাদের কাছে বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবিশ্বাস্য সাফল্যের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন তিনি।
আব্দুল মোমেন জানান, শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (শনিবার) অন্য দেশের চার থেকে পাঁচজন নেতার সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।
সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আব্দুল আজিজ, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো অ্যাঞ্জেল ফার্নান্দেজ, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে (দ্বিপক্ষীয়) বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান আব্দুল মোমেন।
৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিতব্য জি-২০ নেতাদের সম্মেলনে বাংলাদেশসহ ৯টি দেশকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে জি-২০–এর সভাপতি ভারত। জি-২০ হলো ১৯টি দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত একটি আন্তসরকারি ফোরাম।
আব্দুল মোমেন, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ প্রমুখ প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হবেন।
১০ সেপ্টেম্বর (রবিবার) প্রধানমন্ত্রী দুপুর সাড়ে ১২টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে নয়াদিল্লি ত্যাগ করে দেশে ফিরবেন।
