শেখ হাসিনার পদত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) একদফা আন্দোলনের শেষ হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, আমাদের রোডমার্চের উদ্দেশ্য হচ্ছে একটাই (শেখ হাসিনার পদত্যাগ)। এটা নিয়ে রাস্তায় নেমেছি। দাবি না মানা পর্যন্ত বাড়ি ফিরে যাব না কেউ। এ ছাড়া ভোট চোরদের দিন শেষ, জনগণের বাংলাদেশ।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউড়ি নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ে সরকারের পদত্যাগ ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির একদফা দাবিতে আগামী ৫ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে ফেনী, মিরসরাই হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রোড় মার্চ কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় শাখার প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ভোট চোরদের বিদায় করতে ৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সুনামি তৈরি করতে হবে। শেখ হাসিনা বিদায় হও, ভোটাধিকার ফিরিয়ে দাও।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ভোট চোরদের উপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে। এদের এবার ছাড় দেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, রোডমার্চে কুমিল্লায় একটি বড় জনসভা হবে ও চট্টগ্রামে একটি হবে। আর মাঝখানে যেগুলো হবে সেগুলো পথসভা। আমাদের পথসভাগুলো জনসভার মতোই।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের জেলখানায় বর্তমানে কী হচ্ছে সে ব্যাপারে জনগণের সন্দেহ জেগেছে। বেগম খালেদা জিয়ার শরীর কী পর্যায়ে এভাবে এসেছে এটা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। অনেকেই জেলখানায় মারা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, অনেকে জেলখানা থেকে বের হয়ে মারা যাচ্ছে। তাহলে বাংলাদেশের জেলের ভেতরে কী হচ্ছে? এই প্রশ্নগুলো জনমনে এসেছে আজ।
শুধু শমসের-তৈমুর নয় আরও অনেকেই বিএনপি থেকে চলে যাবে—তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ মন্তব্য করেছেন, শুধু শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমুর আলম খন্দকার নয় আরও অনেকেই বিএনপি থেকে চলে আসবে।
তিনি বলেন, যে দল নেতাদের সম্মান দিতে জানে না এবং যে দল কাউকে নির্বাচন করতে দেয় না, সেই দল তো সবাই করবে না।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিএনপির সিনিয়র নেতা শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমুর আলম খন্দকারের তৃণমূল বিএনপিতে যোগদান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলন আর নির্বাচনে আসা না আসা নিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি জনমনে বিভ্রান্তিই সৃষ্টি করতে চায়।
হাছান মাহমুদ বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে তারা যেমন বলেছিল নির্বাচনে অংশগ্রহণ নেবে না, কিন্তু শেষমেষ অংশ নিয়েছিল। এবারও তাদের এখনকার বক্তব্য আর এক মাস আগের বক্তব্যের মধ্যে কিছুটা তফাৎ আছে। যারা একটু অনুসন্ধিৎসু তারা এটা বুঝতে পারেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, একটি গণমুখী রাজনৈতিক দল যদি ক্রমাগতভাবে নির্বাচন বর্জন করে তাহলে তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সদ্য সমাপ্ত কানাডা সফরের সংক্ষিপ্ত বর্ণনায় হাছান মাহমুদ জানান, “টরন্টো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ১৩ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু বায়োপিক ‘মুজিব-একটি জাতির রূপকার’ সিনেমার প্রথম প্রদর্শনী হয়েছে। ২ ঘণ্টা ৫৮ মিনিটের বিরতিহীন এ প্রদর্শনীতে একজন দর্শকও আসন থেকে নড়েননি। সেখানে বাংলাদেশি, ভারতীয় ছাড়াও বিভিন্ন দেশের দর্শকেরা ছিলেন। প্রত্যেকেই সিনেমাটির প্রশংসা করেছেন। সিনেমাটি প্রকৃতপক্ষে আমাদের ইতিহাসের দলিল হয়ে থাকবে। আগামী মাসে আমরা বায়োপিকটি বাংলাদেশে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করছি”।
হাছান মাহমুদ আরও জানান, কানাডা সফরে সে দেশের উচ্চকক্ষ সিনেটের মানবাধিকার কমিটির চেয়ার সিনেটর সালমা আতাউল্লাজানের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়েছে। সালমা আতাউল্লাজান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
এ ছাড়া কানাডা পার্লামেন্টের ইমিগ্রেশন এবং নাগরিকত্ববিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ার সালমা জাহিদ এমপির সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশিদের সহজতর ইমিগ্রেশন এবং আমাদের শিক্ষার্থীদের সহজতর ভিসার জন্য তাকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে ফেরার পথে আমি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন আমাদের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপিকে দেখতে গিয়েছিলাম। তিনি খুবই ভালো আছেন। দেশে নানা আলোচনা হয়েছে কিন্তু আমি দেখেছি তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা খুবই ভালো।