অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ঢাকায় বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্য উদ্বেগের কারণ—সিপিডি


ঢাকায় বায়ুদূষণ
ঢাকায় বায়ুদূষণ

ঢাকার বায়ু দূষণ মারাত্মক স্বাস্থ্য উদ্বেগ তৈরি করছে। পাশাপাশি স্ট্রোক, হৃদরোগ, ফুসফুসের ক্যানসার এবং দীর্ঘস্থায়ী ও তীব্র উভয় ধরনের শ্বাসযন্ত্রের রোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এমন তথ্য তুলে ধরেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) একটি সমীক্ষা।

এতে বলা হয়েছে, অ্যাজমাসহ তীব্র শ্বাসযন্ত্রের রোগ, যার প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে কাশি, শ্বাসকষ্ট, সর্দি, গলা ব্যথা, বুকে ব্যথা এবং চোখের যন্ত্রণা। এসব ঢাকা শহরে উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে অনুষ্ঠিত ‘রিডুসিং পলিউশন ফর গ্রিনিং সিটি’ শীর্ষক জরিপে এ তথ্য প্রকাশ করেছে সিপিডি।

প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা ফেলো সৈয়দ ইউসুফ সাদাত, প্রোগ্রাম সহযোগী (গবেষণা) আফরিন মাহবুব এবং গবেষণা সহযোগী মরিয়াম বিনতে ইসলাম।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সৈয়দ ইউসুফ সাদাত। ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় ৫০০ জনের ওপর জরিপটি পরিচালনা করে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে সিপিডি। সভাপতিত্ব করেন ড. ফাহমিদা খাতুন। প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার।

অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মাতি ক্যানেলসহ দেশি-বিদেশি বেশ কয়েকজন পরিবেশবাদী উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরিপে অংশগ্রহণকারী ৭৬ শতাংশ মানুষ মনে করেন গত ২ থেকে ৩ বছরে বায়ু দূষণ বেড়েছে। প্রায় ৭৩ শতাংশ বলেছেন যে, আগের তুলনায় এই সময়ে প্লাস্টিকদূষণ বেড়েছে। প্রায় ৪৩ শতাংশ পরিবার মনে করেন যে, রাস্তায় সরাসরি প্লাস্টিকের ডাম্পিংয়ের কারণে দূষণ বাড়ছে।

বায়ুদূষণের কারণে সৃষ্ট এসব রোগের কারণে ঢাকাবাসী প্রতি বছর শ্বাসকষ্টজনিত রোগের চিকিৎসায় জনপ্রতি খরচ করেন চার হাজার টাকার বেশি।

অভিজ্ঞতামূলক তথ্য দেখায় যে, ২০২০ সাল থেকে বায়ুদূষণ ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা নির্দেশ করে যে, উত্তরদাতাদের উপলব্ধি বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

এই ফলাফলগুলোকে দ্রুত নগরায়ণ, শিল্পায়ন, যানবাহন নির্গমন, অপর্যাপ্ত পরিবেশগত বিধিবিধান এবং আবহাওয়া পরিস্থিতির মতো কারণগুলোর সংমিশ্রণের জন্য দায়ী করা যেতে পারে।

হাবিবুন নাহার বলেন, শুধু আইন করে দূষণ বন্ধ করা যাবে না।

তিনি বলেন, “এর জন্য জনসচেতনতা প্রয়োজন। সভা-সেমিনার না করে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে প্রান্তিক পর্যায়ে সচেতনতার উদ্যোগ নেওয়া উচিত”।

সিপিডির সুপারিশ অনুযায়ী, ২০২৮ সালের মধ্যে স্থায়ী চিমনি ইট ভাটা বন্ধ করার জন্য একটি নীতি প্রণয়ন করা উচিত। যাতে বাংলাদেশের সব স্থায়ী চিমনি ইটের ভাটা পর্যায়ক্রমে বন্ধ করা যায়। একই সময়ে, কম দূষণকারী প্রক্রিয়ায় স্থানান্তরিত করে ইট উৎপাদনের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

গবেষকেরা বলেন, দূষণের মাধ্যমে পণ্য উৎপাদনের জন্য শিল্পের ওপর ফিনান্স অ্যাক্টে ১ দশমিক শূন্য শতাংশ সারচার্জ আরোপ করা উচিত। এ অর্থ ব্যয় করা হবে পরিবেশ রক্ষায়।

গবেষকেরা বলেন, প্লাস্টিক দূষণরোধে নীতিগত সুপারিশের মধ্যে রয়েছে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি প্লাস্টিক পণ্য পুনর্ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া।

XS
SM
MD
LG