অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতে কারাভোগ শেষে স্বদেশে ফিরেছেন পাচারের শিকার ১০ বাংলাদেশি


ভারতে কারাভোগ শেষে স্বদেশে ফিরেছেন পাচারের শিকার ১০ বাংলাদেশি।
ভারতে কারাভোগ শেষে স্বদেশে ফিরেছেন পাচারের শিকার ১০ বাংলাদেশি।

পাচারের শিকার ১০ বাংলাদেশি নাগরিককে কারাভোগ শেষে ফেরত দিয়েছে ভারতের পুলিশ। শনিবার (২৫ নভেম্বর) সকালে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ডাউকি থেকে বাংলাদেশের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে স্বদেশে ফিরে আসেন তার। গুয়াহাটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের মাধ্যমে তাদের স্বদেশে পাঠানো হয়।

এর আগে, পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে, ব্র্যাক মাইগ্রেশন তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়। তাদের পরিচয় ও জাতীয়তা নিশ্চিতকরণের পর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ভারতীয় হাইকমিশনের সহযোগিতায় তাদের ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম শুরু হয়।

এই ১০ বাংলাদেশিকে হস্তান্তরের সময়, ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের পক্ষ থেকে জরুরি সহায়তা হিসেবে খাবার, জরুরি কাউন্সেলিং সেবা ও অর্থ সহায়তা দেয়া হয়। বাংলাদেশে ফেরত আসা ব্যক্তিরা হলেন; সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার কামীল আহমেদ, বাহার উদ্দিন, কাওসার আহমেদ, ফয়সাল আলম, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের সবুরা খাতুন, হালিমা খাতুন, হোসনে আরা খাতুন, খাজা ময়েন উদ্দীন, কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের রাসেল জমাদ্দার ও গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার মো. ইব্রাহিম হাওলাদার।

এদের মধ্যে সবুরা খাতুন, হালিমা খাতুন, হোসনে আরা খাতুন ও খাজা ময়েন উদ্দীন একই পরিবারের সদস্য। তারা জানান, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে দালালরা তাদের ভারতে পাচার করে দেয়। তাদের মেঘালয়ের একটি এলাকায় রাখা হলে, পুলিশ আটক করে। এরপর সেখানকার আদালত অনুপ্রবেশের দায়ে ৯ মাসের কারাদণ্ড দিয়ে, জোয়াই জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেয়।

টাঙ্গাইলের হোসনে আরা জানান, “স্বপন নামের এক যুবক ২৫ হাজার টাকা মাসিক বেতনের চাকরি দেয়ার কথা বলে, আমার মা সবুরা বেগম, বড় বোন হালিমা বেগম, আর ১১ বছর বয়সী ছোট ভাই খাজা ময়েন উদ্দিনকে নিয়ে যায়। গাড়িতে তোলার কিছুক্ষণ পর আমাদের আটক করা হয়।”

সিলেটের কাওসার আহম্মদ জানান, মেঘালয়ে কাজ করছিলেন তিনি; কিন্ত ঠিকমতো টাকা পেতেন না। দেশে ফিরে আসতে চেষ্টা করলে তাকে আটক করে জেলে পাঠানো হয়।

সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই ১০ বাংলাদেশি, বিভিন্ন সময়ে ভারতের মেঘালয়ে অনুপ্রবেশের কারণে আটক হন। এরপর আদালতের নির্দেশে তাদের জেলে পাঠানো হয়। পরে তাদের নাগরিকত্ব যাচাই করা হয় এবং স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী যোগাযোগ করে তাদের দেশে ফেরার জন্য ভারত সরকারের অনাপত্তি সংগ্রহ করে মেঘালয় সহকারী হাইকমিশন।

তামাবিল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনু মিয়া ফেরত আসা ব্যক্তিদের গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, “মাঝে-মধ্যেই আমরা এই ধরনের ঘটনা দেখতে পাই। এই ধরনের ঘটনা থামাতে আমাদের সচেতনতা প্রয়োজন।”

ভারতের মেঘালয় রাজ্যের জোয়াই কারাগারের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট বাটস্কামেম ননিবারি বলেন, “দুই প্রান্তের দালালদের খপ্পরে পড়ে বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে অনেকে ভারতে অনুপ্রবেশ করে। বৈধ পথে না আসায় আটক হন।”

XS
SM
MD
LG