অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

রাজনৈতিক অস্থিরতার বিরূপ প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের পর্যটন খাতে


বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেশটির পর্যটন খাতের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে ও জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যে দর্শনার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হারে হ্রাস পেয়েছে।
বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেশটির পর্যটন খাতের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে ও জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যে দর্শনার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হারে হ্রাস পেয়েছে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দেশটির পর্যটন খাতের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে বলে জানিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তারা জানিয়েছেন, কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, কুয়াকাটাসহ দেশের বেশিরভাগ জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যে দর্শনার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হারে হ্রাস পেয়েছে।

বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর চলমান অবরোধ ও হরতালের কারণে ৯০ শতাংশ ট্যুর অপারেশন ও আবাসনের অগ্রিম বুকিং বাতিল হয়ে গেছে। এক সময়ের ব্যস্ত হোটেল-মোটেলগুলো এখন অতিথি শূন্য। পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টে যেসব অগ্রিম বুকিং ছিলো, তা বাতিল হয়ে গেছে। এর ফলে, গত কয়েক সপ্তাহে দেড় হাজার কোটি টাকার লোকসান গুনতে হয়েছে তাদের।

হোটেল-মোটেল মালিকরা জানান, অক্টোবরের আগে কক্সবাজারের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেলের ৫০-৬০ শতাংশ কক্ষ প্রতিদিন বুকিং হতো। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পর্যটক সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। যেখানে প্রতিদিন সংখ্যা ৫০ হাজার অতিথি থাকতো, এখন এই সংখ্যা ৫-১০ হাজারে দাঁড়িয়েছে। আর এই দর্শনার্থীদের বেশিরভাগ মূলত স্থানীয়। কুয়াকাটা ও সেন্টমার্টিনেও একই অবস্থা বিরাজ করছে।

হোটেল ও মোটেল কর্মচারীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মালিকরা। কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, রাঙ্গামাটি ও কুয়াকাটার মতো পর্যটন স্পটগুলোতে এর প্রভাব নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (টোয়াব) এর সভাপতি শিবলুল আজম কোরেশি।

তিনি বলেন, “পর্যটন খাতের জন্য সংকটময় সময় এখন। নভেম্বর, ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের বুকিং বাতিল করা হয়েছে। কক্সবাজার, কুয়াকাটা, সুন্দরবন, সিলেট, রাতারগুল, জাফলং-তামাবিল, রাঙ্গামাটি ও পতেঙ্গা সৈকতে এই সময় পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় হওয়া উচিত ছিলো; সেগুলো এখন ফাঁকা।”

শিবলুল আজম কোরেশি আরো জানান, সেন্টমার্টিনে তার একটি হোটেল রয়েছে; এর ৯০ শতাংশ কক্ষ এখন খালি পড়ে আছে। তিনি বলেন, “পর্যটন মৌসুম সাধারণত অক্টোবরে শুরু হয় এবং নভেম্বরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় চলতি মাসে প্রায় খালি রয়েছে হোটেল ও মোটেল। অবরোধের কারণে বুকিং বাতিল করা হয়েছে।”

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ জানান, লাগাতার অবরোধের কারণে পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল এখন খালি পড়ে আছে। কলাতলী মেরিন ড্রাইভ রোড হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুখিম খান বলেন, “রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাবে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হবে।” পর্যটকবাহী যানবাহন হরতাল ও অবরোধের আওতার বাইরে রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

একই কথা বলেন কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ। তিনি বলেন, “রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণে যেতে চায় না। নিরাপত্তাজনিত কারণে বিপুলসংখ্যক বুকিং বাতিল করা হয়েছে।"

XS
SM
MD
LG