অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

শেখ হাসিনা: ‘বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে নদীগুলো বাঁচাতে হবে’


মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩।
মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩।

যেকোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের সময় পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়টি মাথায় নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি এ আহবান জানান। বলেন, “বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে, নদীগুলোকে বাঁচাতে হবে।”

ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণ রোধ ও নাব্য রক্ষায় প্রণীত মাস্টার প্ল্যানের আলোকে জরিপ প্রতিবেদন উপস্থাপন এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্প গ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “আমি ক্ষমতায় আসার পর থেকে সবাইকে শহরগুলোর জন্য পরিকল্পনা তৈরি করতে বলেছি। আমরা যে পরিকল্পনাই গ্রহণ করি না কেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পানির প্রবাহের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “অত্যন্ত দুঃখজনক যে অতীতে দেশের উন্নয়ন কর্মসূচি পরিকল্পিতভাবে গ্রহণ করা হয়নি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যারা অস্ত্র হাতে সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলো, তারা দেশের সার্বিকভাবে সমন্বিত ও পরিকল্পিত উন্নয়নে মনোযোগ দেয়নি।”

তিনি বলেন, “ফলে,পরিবেশগত বিষয়গুলোতে অবহেলা করা হয়েছে এবং নদীগুলো দখল হয়ে যায়।”

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে ক্ষমতায় আসার পর তার সরকারের লক্ষ্য ছিলো নদীরক্ষা, নাব্য ফিরিয়ে আনা এবং সেগুলোকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করা। তিনি বলেন, “নদী শাসনের নামে বাঁধ নির্মাণ একটি স্বাভাবিক বিষয় ছিলো; যা উর্বর ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি করেছে।”

শেখ হাসিনা আরো উল্লেখ করেন যে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম মেয়াদে নদী খনন শুরু করা হয় এবং জমির উর্বরতা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে পলি ব্যবহার শুরু করা হয়। তিনি বলেন, “নাব্য বজায় রাখতে এবং ভাঙন রোধে নদী খনন করতে হবে।”

তীরে নির্মিত শিল্প কারখানাগুলোর বর্জ্য নদীতে ফেলা হয় বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, “নালার সমস্ত বর্জ্যও নদীতে ফেলা হয়। বর্জ্য পরিশোধনের কোনো পরিকল্পনা নেই। ফলে, দূষণ বৃদ্ধি পেয়েছে।দূষণের কারণে বুড়িগঙ্গা নদীতে দুর্গন্ধ পাওয়া যায়, যা খুবই বেদনাদায়ক।”

শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা যাই করি না কেন, আমাদের প্রথমে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কথা মাথায় রাখতে হবে।” রাজধানীর চারপাশের নদীগুলো রক্ষায়, শহরের বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (শোধনাগার) স্থাপনের পরামর্শ দেন তিনি।

“বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে, আমাদের নদীগুলোকে বাঁচাতে হবে। বন্যার সঙ্গেই আমাদের বাঁচতে হবে। এটা আমাদের সবসময় মাথায় রাখতে হবে। বন্যার পানির সঙ্গে আসা পলি আমাদের দরকার। এ জন্য, নদী শাসনের ক্ষেত্রে এর গভীরতা বিবেচনা করতে হবে। আর, বর্ষাকালে আসা পানি সংরক্ষণের জন্য আমাদের অবশ্যই নদীর তীরে একটি বাফার জোন তৈরি করতে হবে;” বলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

XS
SM
MD
LG