অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বিএনপি: বুধবার থেকে আবার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ, ১০ ডিসেম্বর দেশব্যাপী মানববন্ধন


বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে ডাকা ৭ম দফা অবরোধ কর্মসূচি শুরু। ২৬ নভেম্বর, ২০২৩। ফাইল ছবি।
বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে ডাকা ৭ম দফা অবরোধ কর্মসূচি শুরু। ২৬ নভেম্বর, ২০২৩। ফাইল ছবি।

বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে, দেশটির নির্বাচন কমিশনের তপসিল ঘোষণার প্রতিবাদে বুধবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে সারাদেশে আবার ৪৮ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।

৩১ অক্টোবরের পর থেকে এটি হবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর দশম দফা অবরোধ কর্মসূচি। অবরোধ ছাড়াও, ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে, গুম ও ভুয়া মামলার শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সারাদেশের সব মহানগর ও জেলা শহরে মানববন্ধন করবে বিএনপি।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ঘোষণা অনুযায়ী, বুধবার সকাল ৬টায় অবরোধ শুরু হয়ে, শেষ হবে শুক্রবার ( ৮ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায়।

রিজভী বলেন, “অবরোধের লক্ষ্য হলো, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন আয়োজন এবং দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সব নেতা-কর্মীর মুক্তিদানে বাধ্য করতে, সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।”

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি জানান, “অন্যান্য বিরোধী দল, যারা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করে আসছে, তারা একই ধরনের কর্মসূচি পালন করবে।”

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় শেষ হবে চলমান অবরোধ কর্মসূচি। এর ৯ ঘণ্টা আগে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করলো বিএনপি। অবরোধ সফল করায়, দেশবাসী ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানান

ঢিলেঢালা অবরোধ

বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা দেশব্যাপী নবম দফার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের দ্বিতীয় দিন ছিলো ঢিলেঢালা। সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে নিয়মিত যানবাহন চলাচল শুরু হয় রাজধানী ঢাকার সড়কে।

বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলের ডাকা সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধ চলছে। ফাইল ছবি।
বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলের ডাকা সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধ চলছে। ফাইল ছবি।

সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের আশঙ্কা সত্ত্বেও, ঢাকার রাস্তায় গণপরিবহন ও যাত্রীদের উপস্থিতি আগের অবরোধের তুলনায় ছিলো অনেক বেশি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে রাস্তায় টহল দিতে দেখা গেছে এবং ঢাকার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে তাদের মোতায়েন করা হয়েছে।

যানবাহনে আগুন

রবিবার রাতে, নাটোর শহরের বড় হরিশপুর এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা ৩টি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া, চট্টগ্রাম নগরীর দামপাড়া ও আকবর শাহ এলাকায় দু’টি বাসে আগুন দেয়া হয়। দামপাড়া এলাকায় আগুন নেভাতে গিয়ে অপর একটি বাসের হেলপার দগ্ধ হন।

রবিবার দিনাজপুরের পৃথক এলাকায় দু’টি ট্রাকে আগুন লাগানো হয়। রাত ৯টার দিকে দিনাজপুরের জালিয়াপাড়া এলাকায় খড়বোঝাই একটি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।

দিনাজপুরের জালিয়াপাড়া এলাকায় খড়বোঝাই একটি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
দিনাজপুরের জালিয়াপাড়া এলাকায় খড়বোঝাই একটি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।

শশরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোকছেদ আলী রানা জানান যে ট্রাকটিতে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেযো হয়েছে। এর আগে, শনিবার দিবাগত রাতে কাহারোল উপজেলার রামপুর এলাকায় আরেকটি ট্রাকে আগুন দেয়া হয়। এ ঘটনায় ট্রাকের চালক আহত হয়েছেন।

বিএনপির চলমান ৪৮ ঘণ্টার অবরোধে ফেনী শহরে দু’টি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আগুন দেয়া হয়েছে। সোমবার সকালে শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের 'গ্রিন টাওয়ার' মার্কেটের সামনে পার্ক করা অটোরিকশায় দু’টিতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।

ফেনী শহরে দু’টি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আগুন দেয়া হয়েছে। ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩।
ফেনী শহরে দু’টি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আগুন দেয়া হয়েছে। ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মার্কেটের সামনে কিছু দুর্বৃত্ত ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং পরে অটোরিকশা দু'টিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। অটোরিকশার চালক ইকবাল হোসেন জানান, তিনি বাধা দিতে গেলে দুর্বৃত্তরা তার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে।

তিনি আরো জানান যে ১২-১৩ জন যুবক গলি থেকে বের হয়ে হঠাৎ গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন, “ক্ষতিগ্রস্থ অটোরিকশা দু’টি থানায় নিয়ে আসা হয়েছে এবং এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

XS
SM
MD
LG