অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বিশ্বব্যাংকের সহায়তা: বুড়িগঙ্গার দূষণ নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগ


বুড়িগঙ্গার দূষণ নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগ।
বুড়িগঙ্গার দূষণ নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগ।

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী, বুড়িগঙ্গা নদীর দূষণ রোধে উদ্যোগী হয়েছেন নদী-তীরের বাসিন্দারা। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় তারা নদী থেকে সংগৃহিত প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহার করে তৈরি করছেন নানা পণ্য।

প্লাস্টিক দূষণ সংকটের ভয়াবহ চিত্র দেখা যায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে। প্লাস্টিকের কারণে পরিবেশগত চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে ঢাকাসহ সারা দেশ। একই সঙ্গে গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই দূষণ।

দ্রুত নগরায়ণের ফলে বাংলাদেশে প্লাস্টিকের ব্যবহার ও দূষণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, এই দূষণ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে বিশ্বব্যাংক।

প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলা এবং সবুজ প্রবৃদ্ধির প্রচারের জন্য বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আগ্রহী হয়ে উঠেছে ঢাকার পাশে অবস্থিত শ্যামপুর, কামরাঙ্গীরচর ও লালবাগ এলাকার মানুষ।

প্লাস্টিক বর্জ্য পুনর্ব্যবহার করার উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক থেকে উৎপাদন করছেন টয়লেট প্যান, পিভিসি পাইপসহ নানা পণ্য। স্থানীয় উদ্যোক্তা ইউসুফ আলী এই উদোগের একজন অগ্রগামী মানুষ।

ইউসুফ আলী জানান, নিয়মিত প্রশিক্ষণের জন্য তার কারখানা এখন পণ্যের গুণমান রক্ষা এবং শ্রমিক সুরক্ষাসহ বিভিন্ন দিক থেকে একটি পরিবেশবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

আরেক উদ্যোক্তা নাজির হোসেন। তিনি প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহার করে হালকা ও সাশ্রয়ী মূল্যের টাইলস তৈরি করেছেন। এগুলো, প্রচলিত মাটি বা সিরামিক টাইলসের চেয়ে সহজে পরিবহন যোগ্য এবং সহজে স্থাপন করা যায়।

“তার উদ্ভাবনী দৃষ্টিভঙ্গি কেবল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টি তুলে ধরে না; বরং, নির্মাণ শিল্পে একটি অর্থনৈতিক বিকল্প সৃষ্টি করেছে;” এ কথা বলেছেন রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টার (আরআইসি) এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক আশফাকুর রহমান।

পিকেএসএফ এর সহায়তায় ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে, অর্থনৈতিক ভাবে কার্যকর ও পরিবেশগত ভাবে দায়বদ্ধ ছোট ও মাঝারি আকারের প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারযোগ্য শিল্প স্থাপনের জন্য একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে আরআইসি।

প্লাস্টিক দূষণে ঢাকার পরিস্থিতি ভয়াবহ। শহরের বার্ষিক মাথাপিছু প্লাস্টিকের ব্যবহার জাতীয় শহুরে গড়ের তিন গুণের বেশি; যার পরিমাণ ২২ দশমিক ২৫ কেজি।

ঢাকায় প্রতিদিন প্রায় ৬৪৬ টন প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়, যা দেশের মোট বর্জ্য উৎপাদনের ১০ শতাংশ। তবে, ঢাকার প্লাস্টিক বর্জ্যের মাত্র ৩৭ দশমিক ২ শতাংশ পুনর্ব্যবহারযোগ্য।

XS
SM
MD
LG