অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

শেখ হাসিনা: ‘জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ প্রয়োজন’


বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক নিবন্ধে লিখেছেন, “জলবায়ু সংকটের প্রভাব প্রমত্তা পদ্মা নদীর পানিতে প্রতিফলিত হয়েছে। তবুও, এই জরুরি পরিস্থিতিতে, বিশেষত প্রশমন, অর্থ এবং অভিযোজনের ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া ধীর রয়ে গেছে।”

থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনের মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কনটেক্সট ফর কনটেক্সট-এ এক মতামত নিবন্ধে এ মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি উল্লেখ করেন,“ এই জরুরি পরিস্থিতিতে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ প্রয়োজন।”

তিনি লিখেছেন, “কপ-২৮ এর মূল লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতার সীমা বজায় রাখা; আর, বিশেষত বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য জরুরিভাবে অর্থ সংগ্রহ করা।”

বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের জন্য বাংলাদেশ মাত্র শূন্য দশমিক ৪৭ শতাংশ দায়ী। কিন্তু, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ হলো সপ্তম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ।

শেখ হাসিনার মতে, “বাংলাদেশ কয়েক দশক ধরে ক্রমবর্ধমান নির্গমনের পরিণতি সহ্য করেছে। যার প্রমাণ ৪০ ডিগ্রির ওপরে তাপমাত্রা, তীব্র তাপপ্রবাহ, বিদ্যুৎ বিভ্রাট, স্কুল বন্ধ এবং বিধ্বংসী বন্যা।”

তিনি উল্লেখ করেন, “এমন পরিস্থিতিতে, কেবল আগস্টেই ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

তিনি লিখেছেন, “বাংলাদেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের সময় জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সক্রিয়ভাবে বিনিয়োগ করেছে। মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা-তে ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সক্ষমতা ৩০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।”

শেখ হাসিনা নিবন্ধে উল্লেখ করেন, “টেকসই কৃষি রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিদ্যুৎ গ্রিডের আধুনিকায়ন সহ জলবায়ু সহনশীলতার জন্য একটি রূপান্তরমূলক কৌশলের রূপরেখা দেয়া হয়েছে মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা-তে।”

“বন্যা প্রতিরোধ, সমুদ্রপ্রাচীর, ম্যানগ্রোভ বন নির্মাণ এবং স্যাটেলাইট আবহাওয়া ট্র্যাকিং সিস্টেম বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রচেষ্টা বিস্তৃত রয়েছে;” উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

তিনি লিখেছেন, “এই উদ্যোগগুলো দেশের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা’র অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য।

“অভিযোজন আন্তঃসংযুক্ত অর্থনীতি এবং খাতগুলোতে প্রবৃদ্ধি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পরিবেশগত ব্যবস্থার বাইরে প্রসারিত। এর জন্যও উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ প্রয়োজন;” উল্লেখ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা আরো লিখেছেন, “ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে; সৌর প্রযুক্তিকে আরো সাশ্রয়ী মূল্যের করা, ইনভার্টারের ওপর কর সংশোধন করা এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা।”

কপ-২৮-এর নেতারা অভিযোজন তহবিলে ১৬ কোটি ৯০ লাখ ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ অংক, বার্ষিক ৩০ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম।

এই পরিস্থিতিতে, ধনী দেশগুলোর জন্য প্রযোজ্য দায়িত্ব পালনের জন্য নিবন্ধে তাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনার মতে, জলবায়ু অর্থায়নকে অবশ্যই তিনটি মানদণ্ড পূরণ করতে হবে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য সামনের ঝুঁকিপূর্ণ বছরগুলো বিবেচনা করে তহবিলের পর্যাপ্ততা, ধারাবাহিকতা এবং ব্যবহার যোগ্যতা নিশ্চিত করা।

তিনি আন্তর্জাতিক অংশীদারদের অভিন্ন লক্ষ্য, সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ কামনা করেন এবং আরো বিলম্বের কারণে ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টি স্বীকার করার জন্য গভীরভাবে চিন্তা ভাবনা করার আহ্বান জানান।

জলবায়ু ঝুঁকি তীব্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, এই ঝুঁকিকে সম্মিলিতভাবে এবং সিদ্ধান্ত মূলকভাবে মোকাবেলার গুরুত্বের ওপর জোর দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

XS
SM
MD
LG