বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে, চট্টগ্রাম-১৬ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে নির্বাচন কমিশন।
মনোনয়নপত্র দাখিল করতে গিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন এবং সাংবাদিকদের মারধর ও নাজেহালের ঘটনায় এ মমলা করা হয়। মোস্তাফিজুর রহমান বর্তমান জাতীয় সংসদেরও সদস্য।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে, মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে, বাঁশখালীর নির্বাচনী কর্মকর্তা হারুন মোল্লা বাদী হয়ে, নির্বাচনী আচরন বিধি আইনের ৮(খ) ধারায় চট্টগ্রাম মহানগরীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।
জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী জানান, ফৌজদারী কার্যবিধি ২০০ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন আদালত। পাশাপাশি অপরাধ আমলে নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।
আগামী ৩ জানুয়ারির মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমানকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার এজাহারে বলা হয়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৬ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হিসেবে মোস্তাফিজুর রহমান গত ৩০ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান।
এসময় তিনি অবৈধভাবে শোডাউন করেন। পাঁচ জনের বেশি, অর্থাৎ ১০০ থেকে ২০০ লোক সমাগম করে নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ করেন।
ওই দিন দুপুর ১২টার দিকে, মনোনয়নপত্র জমা শেষে বেরিয়ে এলে, উপস্থিত সাংবাদিকরা অভিযুক্ত ব্যক্তির কাছে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করার বিষয়ে জানতে চান।
ইনডিপেন্ডেন্ট টিভির সাংবাদিক রাকিব উদ্দিন তাকে নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন কিনা প্রশ্ন করেন।
তখন তিনি ওই সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং কিল ঘুষি মারেন।সাংবাদিককে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে থাকা ২০ থেকে ৩০ জন সমর্থক গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারমুখী আচরণ করেন এবং সাংবাদিকদের মাইক্রোফোন ও ভিডিও ক্যামেরা কেড়ে নেন।
এক পর্যায়ে, সাংবাদিকরা অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে চাইলে, তিনি ও তার সঙ্গে থাকা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি চৌধুরী ফরিদসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দ্রুত চলে যান।
এজাহারে আরো বলা হয়, এই ঘটনায় ইনডিপেন্ডেন্ট টিভির চট্টগ্রাম ব্যুরো ইনচার্জ অনুপম শীল ৩০ নভেম্বর চট্টগ্রাম জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে, চট্টগ্রাম-১৬ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করে। গত ৩ ডিসেম্বর অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান আবু সালেম মোহাম্মদ নোমান প্রতিবেদন দেন।
প্রতিবেদনে, মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে, মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে বিধি অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশ করেন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান। এর পর, মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়।