অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গে আলোচনায় দ্রুত তিস্তা চুক্তি সম্পাদনে জোর হাছান মাহমুদের


ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

ভারত সফররত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। আলোচনাকালে হাছান মাহমুদ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পানি সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে দ্রুত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সম্পাদন এবং গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির নবায়নের ব্যাপারে জোর দিয়েছেন।

গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ভারতে প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন হাছান মাহমুদ।

বৈঠকে তাঁরা দুই দেশের জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ভবিষ্যতের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন৷

তাঁরা সীমান্ত হত্যার বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন। দুই পক্ষই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো এবং সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে এবং মারাত্মক অস্ত্র ব্যবহার না করতে সম্মত হয়।

হাছান মাহমুদ বৈঠকে এস জয়শঙ্করের কাছে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা প্রত্যাহার এবং বিশেষ করে রমজান মাসে মূল্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করেন।

দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তাঁরা পারস্পরিক স্বার্থের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলো নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্য, সংযোগ, বিদ্যুৎ, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা, পানি ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতার ওপর জোর দেন।

দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী উপ-আঞ্চলিক, আঞ্চলিক এবং বহুপক্ষীয় প্ল্যাটফর্মে একে অপরকে আরও সহযোগিতা করতে সম্মত হন।

এস জয়শঙ্কর উল্লেখ করেন, দুই দেশের জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণে বাংলাদেশ ও ভারতকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

বৈঠকের পর এস জয়শঙ্কর এক্সে (যা আগে টুইটার নামে পরিচিত ছিল) শেয়ার করা এক সংক্ষিপ্ত বার্তায় বলেন, “আমাদের আজকের আলোচনা বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীকে (বন্ধুত্ব) শক্তিশালী করবে।”

এ বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি হাছান মাহমুদের যেকোনো দেশে তাঁর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর।

এর আগে হাছান মাহমুদ দিল্লির সর্দার প্যাটেল ভবনে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠক করেন।

এ সময় হাছান মাহমুদ বলেন, উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি বজায় রাখা অপরিহার্য এবং ভারতে তার চলমান দ্বিপক্ষীয় সফরের সময় এটিই অগ্রাধিকার পাচ্ছে।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারতও ব্যাপক উন্নয়ন করেছে।

“উন্নয়নের এই ধারা বজায় রাখতে আঞ্চলিক রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি বজায় রাখার কোনো বিকল্প নেই। আমরা সে দিক নিয়ে আলোচনা করেছি,” হাছান মাহমুদ বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে পূর্ণ অধিকার দিয়ে পুনর্বাসনের বিষয়ে এবং মিয়ানমারের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার উপায় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

হাছান মাহমুদ ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি কলকাতায় যাবেন।

XS
SM
MD
LG