আসন্ন রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে, অসাধু ব্যবসায়ীদেন বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) সদস্যদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৬ মার্চ) রাজধানী ঢাকার কুর্মিটোলায়, র্যাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এই আহবান জানান তিনি। “পবিত্র রমজান আসছে। এ মাসে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী লোভ-লালসা সংবর করার পরিবর্তে আরো লোভী হয়ে ওঠে, এটা খুবই দুঃখজনক;” শেখ হাসিনা আরো বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মজুদ শুরু করে, দাম বাড়ায় এবং নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করে। “এসব অসাধু ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে:” তিনি যোগ করেন।
ঈদ সামনে রেখে, জাল নোটের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করতে র্যাব সদস্যদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “এসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে এবং আমি আপনাদের অভিযান অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।”
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও র্যাব
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়।
এই কর্মকর্তাদের মধ্যে, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র্যাব ৭–এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধে সরকারের লড়াইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত।
এতে বলা হয়েছে যে, তারা আইনের শাসন, মানবাধিকারের মর্যাদা ও মৌলিক স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ক্ষুণ্ন করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
র্যাব হচ্ছে ২০০৪ সালে গঠিত একটি সম্মিলিত টাস্ক ফোর্স। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধীদের কর্মকান্ড সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং সরকারের নির্দেশে তদন্ত পরিচালনা করা।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বা এনজিওদের অভিযোগ হচ্ছে যে, র্যাব ও বাংলাদেশের অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ ব্যক্তির গুম হয়ে যাওয়া এবং ২০১৮ সাল থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ী। কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এই সব ঘটনার শিকার হচ্ছে বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা।