অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

স্বাধীনতা দিবসঃ স্মৃতিসৌধে ফুল, বিভিন্ন স্থানে আলোচনা আর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রার্থনা


জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভুটানের রাজা ওয়াংচুক।
জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভুটানের রাজা ওয়াংচুক।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ। রাজধানী ঢাকার অদূরে, সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনসহ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করা হয়,বাংলাদেশের ৫৪তম স্বাধীনতা দিবস।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) প্রত্যুষে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে স্বাধীনতা দিবসের সূচনা হয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশ সফররত ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

পরে, বিদেশি কূটনীতিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

স্বাধীনতা দিবসে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়ক-দ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও ফেস্টুন দিয়ে সজ্জিত করা হয়।

প্রথামতে, দিবসটি উপলক্ষে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করে।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হয়। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ও বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসেও স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ কর্মসূচি পালন করা হয়।

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও ভুটানের রাজার শ্রদ্ধা

রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক প্রথমে স্মৃতিসৌধের বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি, ভুটানের রাজা ও প্রধানমন্ত্রী। এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়।

পরে, আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনা স্মৃতিসৌধের বেদিতে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

ভুটানের রাজা, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী দর্শনার্থী বইয়ে সই করেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হত্যাযজ্ঞ শুরু করার পর, ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লাখ মানুষের আত্মত্যাগ এবং দুই লাখ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ অর্জন করে কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে ফিরে, প্রধানমন্ত্রী ঢাকার ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পুষ্পস্তবক অর্পণের পর বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। পরে, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে কিছু সময়ের জন্য অবস্থান করেন শেখ হাসিনা।

এছাড়া, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শেখ হাসিনা।

মুক্তিযোদ্ধাদের শুভেচ্ছা

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে, দেশের সব মুক্তিযোদ্ধাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকার মোহাম্মদপুরের গজনবী রোডের যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন কেন্দ্রে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ফুল, ফল ও মিষ্টি পাঠিয়ে তাদের শুভেচ্ছা জানান শেখ হাসিনা।

মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন কেন্দ্রে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ফুল, ফল ও মিষ্টি পাঠিয়ে তাদের শুভেচ্ছা জানান শেখ হাসিনা।
মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন কেন্দ্রে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ফুল, ফল ও মিষ্টি পাঠিয়ে তাদের শুভেচ্ছা জানান শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং-এর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সহকারী একান্ত সচিব গাজী হাফিজুর রহমান লিকু ও সহকারী প্রেস সচিব এবিএম সরওয়ার-ই-আলম সরকার স্বাধীনতা দিবেসর সকালে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে এসব সামগ্রী হস্তান্তর করেন।

স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, দুই ঈদ ও পহেলা বৈশাখ এবং প্রতিটি জাতীয় দিবস ও উৎসবে তাদের স্মরণ করায়, মুক্তিযোদ্ধারা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

মুক্তিযোদ্ধারা নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার জন্য শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধি ও আবাসনের ব্যবস্থা করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তারা।

স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) গণভবনে এক অনুষ্ঠানে ১০টাকা মূল্যমানের স্মারক ডাকটিকিট, ১০ টাকা মূল্যমানের উদ্বোধনী খাম এবং ৫ টাকা মূল্যের ডাটা কার্ড অবমুক্ত করেন।

এ উপলক্ষে একটি বিশেষ সিলমোহর ব্যবহার করা হয়। ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও ডাটা কার্ড ঢাকা জিপিওর ফিলাটেলিক ব্যুরো থেকে বিক্রি শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে, দেশের অন্যান্য জিপিও এবং প্রধান ডাকঘরে এগুলো পাওয়া যাবে।

XS
SM
MD
LG