অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলা নববর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতি সম্পন্ন, নিরাপত্তা জোরদার করেছে ডিএমপি


রবিবার, ১৪ এপ্রিল উদযাপিত হবে বাংলা নববর্ষ।
রবিবার, ১৪ এপ্রিল উদযাপিত হবে বাংলা নববর্ষ।

বাংলাদেশে রবিবার (১৪ এপ্রিল) উদযাপিত হবে বাংলা নববর্ষ। পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ হলো এই ভূখণ্ডের সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক ও সর্বজনীন উৎসব। দিনটি উদযাপনের জন্য সকল প্রস্ততি সম্পন্ন হয়েছে বাংলাদেশ জুড়ে।

এবছর খ্রিস্টীয় সাল লিপইয়ার হওয়ায়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশে অভিন্ন দিনে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হচ্ছে। বাংলাদেশে বাংলা বর্ষপঞ্জি শুরু হয় ১৪ এপ্রিলকে পহেলা বৈশাখ নির্দিষ্ট করে। আর, পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা বাংলা নববর্ষ উদযাপন করেন প্রাচীন বাংলা বর্ষগণনার ঐতিহ্য মতে।

বর্ষবরণের মূল আয়োজন

বাংলাদেশে বর্ষবরণের চমকপ্রদ ও জমজমাট আয়োজন হয় রাজধানী ঢাকায়। এখানে বৈশাখী উৎসবের অনুষ্ঠানমালা এক মিলন মেলার সৃষ্টি করে। নববর্ষের প্রথম প্রভাতে রমনা উদ্যান ও এর চারপাশের এলাকায় উচ্ছল জনস্রোতে সৃষ্টি হয় জাতীয় বন্ধন।

ছায়ানটের উদ্যোগে জনাকীর্ণ রমনার বটমূলে রবীন্দ্রনাথের আগমনী গান ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’-এর মাধ্যমে নতুন বর্ষকে বরণ করা হয়। ১৩৭২ বঙ্গাব্দে (১৯৬৫) ছায়ানট প্রথম এ উৎসব শুরু করে। এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের বকুলতলার প্রভাতী অনুষ্ঠানে নববর্ষকে সম্ভাষণ জানানো হয়।

এখানকার চারুশিল্পীদের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, নববর্ষের আহবানকে করে তোলে নয়ন মনোহর এবং গভীর আবেদনময়। এ শোভাযাত্রা উপভোগ করে সব শ্রেণীর মানুষ। দিনটিতে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ, টি.এস.সি এবং চারুকলা ইনস্টিটিউট সহ সমগ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা পরিণত হয় বিশাল জনসমুদ্রে

ডিএমপির নিরাপত্তা প্রস্তুতি

রমনা পার্ক বটমূলে পহেলা বৈশাখ উদযাপন সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট হুমকির তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। তবে প্রয়োজনীয় সকল সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) রমনা বটমূলে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতি পর্যালোচনার পর এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ডিএমপি কমিশনার।

তিনি বলেন, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, সকল নির্ধারিত অনুষ্ঠান বিকাল ৫টার মধ্যে শেষ হবে এবং এর পরপরই প্রাঙ্গণ পরিষ্কার করা হবে। অতীতে এই জাতীয় সাংস্কৃতিক সমাবেশকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের আলোকে এই পদক্ষেপগুলোর গুরুত্বের ওপর জোর দেন কমিশনার হাবিবুর রহমান।

রমনা বটমূলে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতি পর্যালোচনার পর এক ব্রিফিংয়ে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। ১৩ এপ্রিল, ২০২৪।
রমনা বটমূলে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতি পর্যালোচনার পর এক ব্রিফিংয়ে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। ১৩ এপ্রিল, ২০২৪।

ডিএমপি কমিশনার জানান, সিসিটিভি নজরদারি, ড্রোন পর্যবেক্ষণ এবং ইভেন্ট ভেন্যুগুলোর চারপাশে কৌশলগতভাবে স্থাপন করা ওয়াচ টাওয়ারসহ বিস্তৃত সুরক্ষা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট একটি প্রাথমিক নিরাপত্তা মূল্যায়ন সম্পন্ন করেছে বলে জানান তিনি। বলেন, “নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য সুস্পষ্ট কর্মকৌশল নির্ধারণ করেছে ডিএমপি।”

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রমনা পার্কের আশপাশের এলাকায় নিরাপদ ও সুশৃঙ্খলভাবে উদযাপনের জন্য শনিবার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা থেকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কার্যকর হচ্ছে।

রমনা বটমূলের নিরাপত্তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার। তিনি জানান, প্রতিটি প্রবেশদ্বারে আর্চওয়ে এবং মেটাল ডিটেক্টর স্থাপন থাকবে। আর, রবিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে।

কমিশনার আরো উল্লেখ করেছেন যে অতিরিক্ত সুরক্ষা স্তরগুলোর মধ্যে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা এবং অনুষ্ঠানস্থলে সাদা পোশাকের কর্মকর্তাদের সহায়তা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আন্তর্জাতিক দর্শনার্থীদের জন্য, ট্যুরিস্ট পুলিশ যে কোনো সমস্যা সমাধানে সহায়তা করতে প্রস্তুত থাকবে।

অন্যদিকে জরুরি স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে, ঢাকা মেডিকেল কলেজের সৌজন্যে একটি অস্থায়ী মেডিকেল সেন্টার কাজ করবে। আরো থাকবে লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টার এবং রক্তদান কেন্দ্রের মতো সুবিধাগুলো।

XS
SM
MD
LG