অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশে আরো ৫ দিন অব্যাহত থাকবে তাপপ্রবাহ, জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ


প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

বাংলাদেশের প্রকৃতিতে এই বছরে এখনো কালবৈশাখী নেই; নেই ভারী বৃষ্টির শীতল পরশ। চৈত্রের শেষ দিকে কিছু এলাকায় ঝড়-বৃষ্টি হলেও, তা ছিলো অনেকটা স্থানীয়। আবহাওয়া অফিস বলছে, চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে অন্তত আরো পাঁচ দিন।

তাপপ্রবাহ

বাংলাদেশে ঢাকাসহ ছয়টি বিভাগে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা আগামী পাঁচ দিন এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। সোমবার (১৫ এপ্রিল) পূর্বাভাসে এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশের আবহাওয়া দফতর। এর আগে, আবহাওয়া দফতর বলেছিলো, ১৬ ও ১৭ এপ্রিলে তাপমান সামান্য কমতে পারে। তারপর আবার শুরু হবে তাপপ্রবাহ।

রবিবার (১৪ এপ্রিল) বাংলাদেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাঙামাটিতে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।পূর্বাভাস বলছে, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট বিভাগ এবং রংপুর ও নীলফামারী জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।

সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরো বলা হয়েছে, সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

বৃষ্টি হতে পারে

পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় পশ্চিমবঙ্গের নিম্নচাপের বর্ধিতাংশ এবং দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী লঘুচাপ অবস্থান করছে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

এতে আরো বলা হয়েছে, বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

মেহেরপুরে তীব্র গরম

বাংলাদেশের অন্যতম তাপপ্রবাহ প্রবণ এলাকা চুয়াডাঙ্গ-মেহেরপুর। তীব্র গরমের বিরূপ প্রভাব পড়েছে এই অঞ্চলের জনজীবনে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে সূর্যের দাপট। এর প্রভাব পড়ছে প্রাণ-প্রকৃতিতে। বৈরী আবহাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বয়স্ক ব্যক্তি ও শিশুরা।

এক সপ্তাহ আগে শুরু হয়েছে এই তাপপ্রবাহ। জীবন-জীবিকার প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। অসুস্থ হয়ে পড়ছেন প্রায় সব বয়সী মানুষ। শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ডায়রিয়ায়।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) এই জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ২০ শতাংশ। এর আগে গত ১ এপ্রিল এ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রবিবার (১৪ এপ্রিল) বিকাল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে চুয়াডাঙ্গ-মেহেরপুর অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে।

রবিবার দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৩২ শতাংশ। বিকাল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস; বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ২১ শতাংশ।

আবহাওয়ার সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে, সাতদিন মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে এবং দিনে ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ এই এলাকায় বয়ে চলেছে। আরো কিছু দিন এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়াতে পারে বলে জানান তিনি।

গত বছর চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়; ১৫ এপ্রিল ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১৬ এপ্রিল ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১৭ এপ্রিল ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১৮ এপ্রিল ৪০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১৯ এপ্রিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২০ এপ্রিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

উল্লেখ্য যে, ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হলে মৃদু তাপপ্রবাহ এবং ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়। আর, তাপমান এর উপরে উঠলে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

XS
SM
MD
LG