অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতে সাংবাদিকদের ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে দেয়া হয়েছে, বলছেন সাংবাদিক রবীশ কুমার


ফাইল ছবি- ম্যানিলায় ফরেন করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব দ্য ফিলিপিন্সের সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় সাংবাদিক রবীশ কুমার। (৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯)
ফাইল ছবি- ম্যানিলায় ফরেন করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব দ্য ফিলিপিন্সের সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় সাংবাদিক রবীশ কুমার। (৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯)

সাংবাদিক রবীশ কুমার সাম্প্রতিক এক আলোচনায় ভারতের মিডিয়া যে সব সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে তা নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। ভয়েস অফ আমেরিকার সাথে আলোচনায় তিনি বলেন, ভারতের “সাংবাদিকতা মৃত”। ভারতে এখন ম্যাগ্নিফাইং গ্লাস দিয়ে খুঁজে নিতে হবে সাংবাদিকতা পেতে গেলে।

ভারতের অন্যতম বড় নেটওয়ার্ক এনডিটিভিতে ২৫ বছরেরও বেশি সময় সান্ধ্যকালীন সংবাদ উপস্থাপকের কাজ করেন তিনি। ২০২২ সালের নভেম্বরে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ধনকুবের গৌতম আদানি এই নেটওয়ার্কটি কিনে নেবার পর সম্পাদকীয় স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে এই চাকরি ছেড়ে দেন কুমার।

কুমার ভিওএ কে বলেন, সাংবাদিকতার নামে টাকা পেলেও তারা ঠিক করে সেই কাজটিও আজকাল করছে না।

হিন্দি ভাষায় কঠিন প্রশ্নের মাধ্যমে সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য খ্যাতি অর্জন করেছিলেন তিনি। তিনি দু'বার রামনাথ গোয়েঙ্কা এক্সেলেন্স ইন জার্নালিজম অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন। তাছাড়া অন্যান্য অনেক পুরষ্কারের মধ্যে রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কারও জিতেছেন তিনি।

ভারতের সাংবাদিকরা সরকারকে ভয় পায়। তারা প্রতিক্রিয়ার ভয়ে এখন প্রশ্ন করেন না বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, সরকার যা চাইছে সব কিছুই যাচাই বাছাই ছাড়াই জনগনের হাতে পোঁছে যাচ্ছে।

চাকুরিতে পদত্যাগের পর ফেসবুকের কয়েক মিলিয়ন ফলোয়ার তার ইউটিউব চ্যানেলের সহায়ক হবে বলে আশা করেছিলেন তিনি। রবীশ কুমার নামের এই চ্যানেলে তার ৯৬ লাখেরও বেশি সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। তিনি মনে করেন, মূলধারার মিডিয়া নয় বরং তার চ্যানেল দিয়ে তিনি এমন সব খবর বা গল্প বলতে পারবেন যা অন্যরা উপেক্ষা করছে বা সাহস করে উঠছে না।

তিনি মনে করেন, ভারতের গণমাধ্যম নির্বাচনী বন্ডের মতো বিষয়গুলো যথাযথভাবে কভার করতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি তার চ্যানেলে, সেসব গল্প কিছু তুলে ধরতে পেরেছেন। একজন রাজনীতিবিদ সংসদ সদস্যের কারাগারের অবস্থান এবং বের হয়ে আসার গল্প তিনি দেখিয়েছেন। কিন্তু ভারতে যখন সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে, তখন রাজনৈতিক গল্প গ্রহণ করা ঝুঁকিপূর্ণ বলেও মনে করছেন তিনি।

সরকার ও তার কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পর তার চ্যানেল টিকে থাকা নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন তিনি। শুধু তিনি নিজেই নয় এরকম অন্যান্য সব ইউটিউবারের মধ্যে এই ধরনের আশঙ্কা ও উদ্বেগ রয়েছে বলেও তিনি জানান।

গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস বা আরএসএফ দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের সাংবাদিকদের ওপর ক্রমবর্ধমান বৈরিতা ও চাপের বিষয়ে সতর্ক করে আসছে। সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া ডেস্কের প্রধান সেলিয়া মার্সিয়ার ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকে সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়ন ও মিডিয়া তীব্রতর হয়েছে বলেই আমরা খেয়াল করছি।"

দমনমূলক বা হয়রানির, সেন্সর বা ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে করা বা এমন প্রচুর মামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বিষয়টিকে সত্যিই উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেন।

ওয়াশিংটনে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস ভয়েস অফ আমেরিকার মন্তব্যের অনুরোধে কোন সাড়া দেয়নি।

XS
SM
MD
LG