বাংলাদেশের চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বলীখেলা অনুষ্ঠিত হবে বৃহস্পতিবার(২৫ এপ্রিল)। আর এ উপলক্ষে বসছে তিনদিনের বৈশাখী মেলা। মেলা শুরু হবে বুধবার (২৪ এপ্রিল) থেকে; চলবে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) পর্যন্ত।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের যুবকদের সংগঠিত করতে, ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বকশীর হাটের ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর চালু করেছিলেন বলীখেলা। এরপর, ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতি ১২ বৈশাখ চট্টগ্রাম শহরের লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে জব্বারের বলীখেলা।
করোনা মহামারীর কারণে ২০২০-২০২১ সালে বলীখেলার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। পরের বছর ২০২২ সাল থেকে আবার নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে জব্বারের বলীখেলা।
বলীখেলা আয়োজনের জন্য ইতোমধ্যে স্থানীয় ব্যবস্থাপনা কমিটি সব প্রস্তুতি নিয়েছে। এ বছর জব্বারের বলীখেলার ১১৫তম আসর বসছে। আগামী ২৫ এপ্রিল যথা নিয়মে খেলা শুরু হবে ২৫ এপ্রিল।
বলীখেলা উপলক্ষে, ২৪ এপ্রিল থেকে ২৬ এপ্রিল ৩ দিনের বৈশাখী মেলা বসছে। বাঙালি সংস্কৃতি ঐতিহ্যবাহী আব্দুল জব্বারের এই বলীখেলাকে কেন্দ্র করে লালদীঘির আশপাশের প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ইতোমধ্যেই মেলার আয়োজন শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসে নগরীর আন্দরকিল্লা, বক্সিরহাট, লালদীঘি, কোতোয়ালি, জেল রোড় এলাকায় সড়কের পাশে নানা পসরা সাজিয়ে বিক্রি শুরু করেছেন।
এবারও মেলায় কয়েক লাখ মানুষের সমাগম ঘটবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা। আয়োজক কমিটির সভাপতি জহর লাল হাজারী জানান, ১৯০৯ সালে এই মেলার প্রথম আয়োজন হয়। এরপর থেকে, করোনা মহামারীর দুই বছর ছাড়া কখনো বন্ধ হয়নি।
“আগামী ২৫ এপ্রিল ঐতিহ্যবাহী লালদিঘী ময়দানে বলীখেলার ১১৫তম আসর বসবে। প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে, একদিন আগে থেকেই বলীরা চট্টগ্রামে অবস্থান করবেন। কয়েক লাখ মানুষ মেলায় অংশ নেবে বলে আশা করছি;” বলেন জহর লাল হাজারী
তিনি আরো বলেন, এ বলীখেলা ও বৈশাখী মেলাকে সামনে রেখে চট্টগ্রামসহ সারা দেশের মানুষের মধ্যে আগ্রহ ও উদ্দীপনা বিরাজ করে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার গ্রামে-গঞ্জে বলীখেলা, গরুর লড়াই, ঘোড়দৌড়সহ বিভিন্ন লোকসংস্কৃতি যুগ যুগ ধরে চলে আসছে।
মেলাতে এ অঞ্চলের মানুষের গৃহস্থালীর নানা ব্যবহার্য পণ্য-সামগ্রী বিক্রির জন্য আনা হয়। বছরব্যাপী এ পেশার সঙ্গে জড়িত মানুষ নানাজাতের গৃহস্থালী সামগ্রী তৈরি করে।
এছাড়া, লালদীঘির বলীখেলার অনুরূপ লোকসংস্কৃতির মেলা আয়োজিত হয় চট্টগ্রামের জেলা-উপজেলা ও গ্রামে-গঞ্জে। সপ্তাহব্যাপী চলে এই আয়োজন। এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন নানা ধর্ম-গোত্র-পেশার মানুষ।