অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ: ‘জিআই স্বীকৃতির সঙ্গে গুণগত মানের দিকেও নজর দিতে হবে’


জিআই পণ্যের নিবন্ধন সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। ২৫ এপ্রিল, ২০২৪।
জিআই পণ্যের নিবন্ধন সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। ২৫ এপ্রিল, ২০২৪।

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, “ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি পণ্যের গুণগত মানের দিকে নজর দিতে হবে।”

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) জিআই পণ্যের নিবন্ধন সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের (ডিপিডিটি) উদ্যোগে রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমির মাল্টিপারপাস হলে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল শাড়ি, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা ও নরসিংদীর অমৃত সাগর কলাসহ ১৪টি জিআই পণ্যের নিবন্ধন সনদ বিতরণ করা হয়।

এ সময় নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, “মাটি, বায়ু, পানি, পরিবেশ, কারিগরদের দক্ষতা প্রভৃতি স্বতন্ত্র ও অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে ছোট এ ভূখণ্ডের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব পণ্যকে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি এর গুণগত মান ও টেকসই সংরক্ষণের দিকে নজর দিতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “বিশ্ববাজারে জিআই পণ্যের প্রচার ও প্রসারে এখনই কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। বিদেশের বাংলাদেশ মিশনগুলো, দেশের সব আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে কেন্দ্রীয়ভাবে জিআই পণ্য প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।”

দেশে-বিদেশে বিভিন্ন মেলায় জিআই পণ্যসমূহ প্রদর্শন করার পরামর্শ দেন তিনি।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ডিপিডিটি, বিসিক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এসব পণ্যের উন্নয়ন ও প্রসারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে।

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ এখন কোনো খালি বাস্কেট নয়, এটি একটি পরিপূর্ণ ভরা বাস্কেট। আমাদের সম্পদের কোনো অভাব নেই, প্রয়োজন এর সদ্ব্যবহারের। প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা, কারিগরি সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসব সম্পদ ও পণ্যের প্রচার-প্রসার ঘটাতে হবে।”

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে এমন ৫০০টি পণ্যের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছি। একটু দেরিতে হলেও আমরা এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছি।”

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় ২০১৩ সালে 'ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন প্রণয়ন এবং পরে ২০১৫ সালে এ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়।

তিনি আরও বলেন, “আমাদের জিআই পণ্যকে সুরক্ষা এবং একইসঙ্গে এর পেটেন্ট দিতে হবে। জিআই পণ্যের প্রচার-প্রসারে বিভিন্ন উৎসব, পালাপার্বণ ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে এসব পণ্যকে উপহার হিসেবে দিতে পারি। তাছাড়া এসব পণ্য সম্পর্কে টিভিসি, ডকুমেন্টারি তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবস্থা প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।”

অনুষ্ঠানে টাঙ্গাইল শাড়িসহ বাংলাদেশের মোট ১৪টি ঐতিহ্যবাহী পণ্যকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সনদ দেওয়া হয়। সেগুলো হলো- গোপালগঞ্জের রসগোল্লা, নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, কুমিল্লার রসমালাই, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল, রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আম, মৌলভীবাজারের আগর, মৌলভীবাজারের আগর আতর, মুক্তাগাছার মণ্ডা, যশোরের খেজুরের গুড়, রাজশাহীর মিষ্টি পান এবং জামালপুরের নকশিকাঁথা। এ নিয়ে ডিপিডিটির জিআই সনদপ্রাপ্ত বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩১টিতে।

ডিপিডিটির মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর রাষ্ট্রদূত মাশফী বিনতে শামস ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার সিদ্দীকা।

XS
SM
MD
LG