অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

তাপ প্রবাহ: তীব্র গরম অব্যাহত, বাংলাদেশে আরো ৩ দিনের সতর্কতা জারি


রাজধানী ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে—আবহাওয়া অধিদপ্তর। ফাইল ছবি।
রাজধানী ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে—আবহাওয়া অধিদপ্তর। ফাইল ছবি।

বাংলাদেশের আবহাওয়া বিভাগ আবার তাপপ্রবাহ সম্পর্কিত সতর্কতা জারি করেছে। অব্যাহত তাপদাহের মধ্যে, রবিবার (২৮ এপ্রিল) জারি করা সতর্কতায় বলা হয়, সকাল থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে।

এতে আরো বলা হয়, এই সময়ে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় ‘অস্বস্তি’ বাড়তে পারে। এর আগেও ১৯, ২২ ও ২৫ এপ্রিল ৭২ ঘণ্টার সতর্কতা জারি করা হয়।

এদিকে, রবিবারের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

আবহাওয়া বিভাগ আরো জানিয়েছে, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকবে।

খুলেছে বিদ্যালয়

তীব্র তাপ প্রবাহের মধ্যে রবিবার (২৮ এপ্রিল) থেকে, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। খুলেছে অন্যান্য বিদ্যালয়।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মাহবুবুর রহমান তুহিন স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, চলমান তাপপ্রবাহের কারণে কোমলমতি শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর লার্নিং সেন্টারগুলোয় শ্রেণি কার্যক্রম চালুর বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে, ২৮ এপ্রিল থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চলমান থাকবে। ১ শিফটে পরিচালিত বিদ্যালয়গুলো প্রতিদিন সকাল ৮ থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে।

প্রজ্ঞাপনে আরো উল্লেখ করা হয়; ২ শিফটে পরিচালিত বিদ্যালয়গুলোয় ১ম শিফট সকাল ৮ টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা এবং ২য় শিফট সকাল পৌনে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে।

আর, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ এবং তাপদাহ সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত অ্যাসেম্বলি বন্ধ থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।

এদিকে, রবিবার থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস শুরু হয়েছে। এর আগে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে সারাদেশে তাপপ্রবাহের কারণে ঈদুল ফিতরের পর ছুটি বাড়ানো হয়েছিলো।

তাপপ্রবাহ পরিস্থিতির পরিবর্তন না হলেও, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ায় অভিভাবকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বেশি উদ্বিগ্ন।

ঈদের ছুটি শেষে, ২১ এপ্রিল স্কুল-কলেজ খোলার কথা থাকলেও, তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করায়, ছুটির মেয়াদ ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

বাংলাদেশের খুলনা বিভাগ সবচেয়ে বেশি তাপদাহ প্রবণ অঞ্চল। সেখানকার অভিভাবকরা বলেছেন, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে তাদের সন্তানরা কীভাবে শ্রেণিকক্ষে থাকবে তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন।

গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের সামনে অপেক্ষা করছেন হীরা খাতুন। তিনি বলেন, “আমার সন্তান ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী এবং তার ক্লাস সকাল ১০টায় শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে। স্কুল কর্তৃপক্ষের উচিত শুধু সকালের শিফটে ক্লাস নেয়া।’

বৃষ্টির পূর্বাভাস

এদিকে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। রবিবার নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়, সকাল ৯টা থেকে পরের ২৪ ঘণ্টায়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।

সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে বলে জানায় আবহাওয়া বিভাগ। এছাড়া, দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে বলা হয় বুলেটিনে।

আর, সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে আবহাওয়া অফিস জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।

শনিবার বাংলাদেশর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায় এবং রবিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় সিলেটে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে সিলেটে, ১৬ মিলিলিটার।

XS
SM
MD
LG