অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

আমেরিকায় হেমন্তের মর্মরধ্বনি


Trees begin to show their autumn colors on the east grounds of the Capitol in Washington, D.C.
Trees begin to show their autumn colors on the east grounds of the Capitol in Washington, D.C.

এখন আমেরিকায় হেমন্তের ঝরা পাতার মর্মরধ্বনি আগুন ঝরা গাছের ডালে ডালে । দিনগুলো ছোট হয়ে এসেছে, রাতের আঁধার দীর্ঘস্থায়ী । রাজধানী ওয়াশিংটনে সময়টা কেমন কাটছে ? এই নিয়ে জেরিলিন ওয়াটসানের প্রতিবেদন থেকে শোনাচ্ছেন রোকেয়া হায়দার

রাজধানী শহরে সারাটা বছরই মানুষের মেলা। তবে গ্রীষ্মকালে ৪ঠা জুলাই স্বাধীনতা দিবসের আতসবাজি দেখার যে ভীড় তা যেন হেমন্তের দিনগুলোয় কমে যায়। গরমে যেমন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মিউজিয়াম ঘুরে বেড়ানোর আগ্রহ থাকে বেশী, এখন বাইরে পাতার রঙ দেখার – ঝরা পাতার মৃদু গুঞ্জনের আকর্ষণ অনেক বেশী। বাইরে এখনও কনকনে ঠান্ডা পড়েনি। শহরের কোলাহল কিছুটা কমেছে কারণ ছেলেমেয়েরা স্কুলে ফিরেছে, মা–বাবা আবার তাদের নিয়মিত কাজকর্মে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ওয়াশিংটনে এখন ভালভাবে নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ানো যায়। ছবি তোলা সহজ ক্যামেরার সামনে কেউ দাঁড়িয়ে পড়বে না।

শহরে অনেক ট্যুর কোম্পানীর যানবাহন আছে তারাই নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে যায় বেড়াতে, অথবা নিজেরাই জায়গা ঠিক করে নিতে পারেন, ইচ্ছেমত ঘুরে বেড়িয়ে নিজেদের মত সব দেখতে পারেন। ওয়াশিংটনে মিউজিয়াম, আর্ট গ্যালারী, মনুমেন্ট, কংগ্রেসভবন, হোয়াইট হাউস বিভিন্ন মেমোরিয়াল ছাড়া আছে ১৭০টি দেশের দুতাবাস কনস্যুলার অফিস। দুটি রাজ্যের নামে প্রধান দুটি সড়ক - ম্যাসাচুসেটস এভিন্যু আর কানেটিকাট এভিন্যুর ওপর বেশীরভাগ এই সব দুতাবাস। আছে কুটনীতিকদের ঘরবাড়ী যেখানে আগে হয়তো ধনী আমেরিকানরা বসবাস করতেন । শহরের মাঝামাঝি ৬টি রাস্তা যেখানে এসে মিশেছে সেই চত্বরের নাম ডুপন্ট সার্কেল তার চারধারে হোটেল রেস্তোরাঁর সারি ।

আরও কিছুটা এগিয়ে যান পটোম্যাক নদীর তীর ঘেঁষে জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয় আর জর্জটাউন এলাকা। এখানেই আছে ডাম্বারটন ওক গার্ডেন - সংগ্রহশালা, পাঠাগার আর ফুলে ফুলে ভরা উদ্যান। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের প্রায় শেষ প্রান্তে ১৯৪৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেট বৃটেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের প্রতিনিধিরা একটি ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সেই সম্মেলনে মিলিত হন এখানে । সেই আলোচনা থেকেই ১৯৪৫ সালে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার সূচনা। ব্যস্ত শহরের মাঝে খানিক আরাম ও শান্তির নীড় ডাম্বারটন ওক গার্ডেন ।

তারপর শহর ছাড়িয়ে, গাড়ী চালিয়ে ঘন্টাখানেক পথ পেরিয়ে চলে যান ভার্জিনিয়ার পাহাড় ঘেরা শেনাদোহ্ জাতীয় উদ্যানে । ব্লুরীজ পাহাড়, এ্যাপালেসিয়ান পর্বতমালার অংশ । স্কাইলাইন ড্রাইভের ১০৭ কিলোমিটার পথের বাঁকে বাঁকে হরিণ স্বাগত জানায়। আর দূর থেকে ভেসে আসে প্রিয়তমর সুরে হেমন্তের আহ্বান……..

XS
SM
MD
LG